চেয়ারম্যানকে ফাঁসাতে মেম্বারকে খুন

18
Spread the love

খুলনাঞ্চল রিপোর্ট

বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই যশোর থেকে মোটরসাইকেলে গোপালগঞ্জে এসে হত্যা করা হয় ইউপি মেম্বার হামিদুল হককে। মূল আসামিসহ দুজনকে গ্রেফতারের পর, চাঞ্চল্যকর এ তথ্য জানায় সিআইডি।

মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। এর আগে খুনের সঙ্গে জড়িত তিন জনকে দেশের বিভিন্ন জেলা ও শহর থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। চেয়ারম্যান লাচ্চু শরীফকে ফাঁসানোর জন্য গোপালগঞ্জের গোপিনাথপুর ইউনিয়নের হামিদুল শরীফ মেম্বারকে তৃতীয় একটি পক্ষ খুন করে বলে জানান তিনি।

গ্রেফতার হওয়া তিন জন হলেন- রবিউল শরীফ (৫৭), আমির মোল্লা (৩৫) ও সাগর।

গত ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে গোপালগঞ্জ জেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার হামিদুল শরীফ খুন হন।  গোপিনাথপুর হাই স্কুলের কাছে আততায়ীরা গুলি করে তাকে হত্যা করে। এই ঘটনায় গোপিনাথপুর থানায় নিহতের ভাই মনির শরীফ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। আধুনিক তদন্ত কলাকৌশল ব্যবহার করে সিআইডি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেলের মালিক ও চালক আমির মোল্লাকে শনাক্ত করে। পরে, আমির মোল্লাকে যশোর থেকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকার পাটুয়াটুলী থেকে মূল আসামি রবিউল শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয় গোপালগঞ্জ থেকে।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, কারিগরি তথ্য ও রুপসা ব্রীজে টোল প্লাজার সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ থেকে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, রবিউল শরীফ ও আমির মোল্লা দীর্ঘদিন ধরে যশোরে বসবাস করেন। যদিও তাদের গ্রামের বাড়ি নিহত মেম্বারের এলাকায়। এ হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য তারা দুজন মোটরসাইকেলে করে গোপালগঞ্জ এসেছিলেন এবং হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে চলে যান।

হত্যাকাণ্ডের কারণ বলতে গিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান (লাচ্চু শরীফ) আমির মোল্লাকে একটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে হামিদুল শরীফসহ কয়েকজন মেম্বার মিলিত হয়ে অনাস্থা এনেছিল। এতে, আমির মোল্লা হামিদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং হত্যা করলে চেয়ারম্যান এ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী হবে।

এদিকে, রবিউল শরীফ এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত হয়েছেন এজন্য যে, হামিদুল মারা গেলে তার লোক পরবর্তীতে মেম্বার হতে পারবে। মূলত ‘গ্রাম্য পলিটিক্স’ ও ক্ষমতা পাবার লোভে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

গোপিনাথপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান লাচ্চু শরীফ বলেন, আমির মোল্লাকে আমি চিনি না সুতরাং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর কোন প্রশ্নই আসে না। তবে রবিউল শরীফকে চিনি, সে নিহত হামিদুল শরিফের পাশের বাড়ির বাসিন্দা।

হত্যাকাণ্ডে একটি অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। অস্ত্রের বিষয় ইতোমধ্যে তথ্য পাওয়া গেছে। অস্ত্র উদ্ধারে কাজ চলছে বলেও জানান সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।