বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের প্রতিবাদে যবিপ্রবিশিস-এর মানববন্ধন

5

যশোর অফিস

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (যবিপ্রবিশিস)। আজ বুধবার বিকেলে যশোর শহরের বকুতলাস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের সামনে যবিপ্রবিশিস এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলি ট্যানেলসহ দেশের উন্নয়ন আজকে দৃশ্যমান। সুতরাং দেশের উন্নয়ন যেন বাধাগ্রস্ত হয়, উন্নয়নের গতিতে যেন ভাটা পড়ে, দেশে যেন অরাজকতা তৈরি হয়, সে জন্য একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করছে। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে শুধু বাংলাদেশে নয়, অনেক মুসলমান দেশেও ভাস্কর্য আছে। কারণ ভাস্কর্য হলো ইতিহাসের প্রতীক, সৌন্দর্যের প্রতীক, জাতিসত্তা বিকাশের প্রতীক এবং ইতিহাসকে বর্তমানে ধরে রাখার প্রতীক। সুতরাং দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতেই যে এ ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়, তিনি বাঙালি জাতির স্বাধীনতার প্রতীক, আমাদের ঐক্যের প্রতীক। আপনারা জানেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে একাত্তরে পরাজিত শক্তি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, আমেরিকা, ইউরোপ করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত হলেও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখন দেশকে ৫০ বছর পেছনে নিয়ে যাওয়ার জন্য এমন ঘটনা ঘটনো হচ্ছে। যারা এ হীন চক্রান্ত লিপ্ত রয়েছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

সভাপতির বক্তব্যে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুর তাদের প্রধান উদ্দেশ্য নয়, এই সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- যেন ব্যাহত হয়, সেটাই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্যে। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধকে বিশ^াস করি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ^াস করি তারা কখনো এ ধরনের কর্মকা- মেনে নিতে পারি না। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

মানবববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন, ড.ইঞ্জি বলেন, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসাথে যারা এ ঘটনায় দোষী তাদেরকে অতিদ্রুত বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিয়ে এমন উদাহরণ তৈরি করতে হবে যেন, ভবিষ্যতে কেউ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের মতো ধৃষ্টতা দেখাতে না পারে।

মানববন্ধনে যবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান মোল্যা, ডিনস কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. নাসিম রেজা, কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. বিপ্লব কুমার বিশ^াস, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম দেলোয়ার হোসেন, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সুব্রত মন্ডল, শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. নাজমুল হাসান, শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের প্রভোস্ট ড. সেলিনা আক্তার, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. মীর মোশাররফ হোসেনসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ ও শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।