চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
চুয়াডাঙ্গায় পৃথক তিনটি হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহা. রবিউল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পর দণ্ডিতদের পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নেয়া হয়।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- খুলনার দৌলতপুর উপজেলার মহেশ্বরপাশা গ্রামের বাসিন্দা ও চুয়াডাঙ্গা সিআইডি পুলিশের কনস্টেবল অসীম কুমার ভট্টাচার্য, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন আনার ও দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর গ্রামের জিয়ারুল ওরফে জিয়া।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৮ জুন রাতে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মাদরাসাপাড়ায় সিআইডির কনস্টেবল অসীম কুমার ভট্টাচার্য ছুরিকাঘাত করে শ্বাশুড়ি শেফালী অধিকারীকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সদানন্দ অধিকারী বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় মামালা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম একই বছরের ২৭ জুন অসীম কুমারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসামির উপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।
এদিকে জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই দুপুরে আনোয়ার হোসেন আনারসহ বেশ কয়েকজন মিলে কুপিয়ে ও পিটিয়ে প্রতিবেশী গিয়াস উদ্দিনকে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে জীবননগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জীবননগর থানার উপপরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম সাতজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালেল ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আসামিদের উপস্থিতিতে আনোয়ার হোসেন আনারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন এবং অন্য ছয়জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
অপরদিকে ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর রাতে জীবননগর উপজেলার রতিরামপুর গ্রামে বাড়ি ফেরার সময় আব্দুর রহিমকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে জীবননগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে জিয়ারুল ওরফে জিয়াকে পুলিশ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জীবননগর থানার উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারি পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আসামির উপস্থিতিতে তাকে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।