মোঃ জাহিদুর রহমান সোহাগ দাকোপ
অতিথি পাখির আগমনে খুলনার দাকোপে স্থানীয় অসাধু শিকারীরা বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা অভিনব নানা কৌশলে অসংখ্য পাখি শিকার করছে। এসব পাখি আবার অগ্রিম অডার নেয়া খরিদ্দারদের কাছে বিক্রিও করছে শিকারীরা।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও নভেম্বর মাসে শীতের শুরুতে উপজেলার বিভিন্ন খাল বিলে অতিথি পাখি আসছে। সাধারণত প্রচন্ড শীতের প্রকোপ থেকে আত্মরক্ষার্থে সুদূর হিমালয়, সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান অঞ্চল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি এঅঞ্চলে আসে। আবার শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে গেলে তারা পূর্বের স্থানে ফিরে যায়। এসব পাখির মধ্যে রয়েছে বালি হাঁস, জলপিপি, কোম্বডাক, সরালী কাস্তে চাড়া, পাতাড়ি হাঁস, কাদা খোচা, ডংকুর, হুরহুর, খয়রা, সোনা রিজিয়া অন্যতম। জানা গেছে ৮০’র দশকে এদেশে আশা অতিথি পাখির সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ৩‘শ প্রজাতির।
কিন্তু বর্তমানে এর সংখ্যা নেমে সত্তর থেকে আশিতে চলে এসেছে। তাই শীতের পাখির আগমনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এবারও বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে অসাধু শিকারী দল। স্থানীয় এসব শিকারীরা আইনের তোয়াক্কা না করে মাঠে নেমে মেতে উঠেছে পাখি নিধনে। শিকারীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের খাল, বিল, নদী ও মাঠ থেকে অভিনব নানা কৌশলে পাখি শিকার করছে।
জানা গেছে নাইলনের সুতা দিয়ে ছোট বড় ফাঁদ তৈরি করে পাখি চলার পথে পেতে রাখে। রাতে পাখিরা যখন উড়ে বেড়ায় তখন এই ফাঁদে পাখি আটকা পড়ে। এছাড়াও চোখে আলো ফেলে, কেঁচো দিয়ে বশি পেতে, কোচ মেরে ও কারেট জাল পেতে এসব পাখি শিকার করে থাকে। এসব পাখি আবার অগ্রিম অডার নেয়া ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। প্রশাসন তৎপর হলে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে এসব পাখি শিকার বন্দো হবে বলে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিকারীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, প্রতি রাতে ধান ক্ষেতে বসে পাখির ডাকের সাথে সুর মিলানো বাঁশি অথবা মোবাইল ফোনে রেকর্ড বাজিয়ে উড়ন্ত পাখিদের নিচে নামিয়ে ফাঁদে ফেলে অতি সহজে শিকার করছে। এসব পাখি আবার অগ্রিম অডার নেয়া খরিদ্দারদের কাছে পাখি প্রতি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছে।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ পরিতোষ কুমার রায় বলেন তিনিও পাখি শিকারের কথা বিভিন্ন লোক মুখে শুনেছেন। তবে তার দপ্তরের সাথে যুক্ত বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের খোঁজ খবর নিয়ে পাখি শিকারীদের নাম ঠিকানা দিতে বলেছেন। আর দিলে তিনি পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে শিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।