যশোর অফিস
যশোর শার্শায় ভারত সীমান্তবর্তী গোগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ও তার দুই ছেলেসহ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ইউপি সদস্য বাবুল হোসেনকে জনসম্মুখে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের হস্তক্ষেপে তাকে উদ্ধার করে যশোর একটি প্রাইভেট হসপিটালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, রশিদ চেয়ারম্যানের ছেলে সম্রাট হোসেনের সঙ্গে একই ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বাবুল মিয়ার মধ্যে বিভিন্ন অপকর্মের মাধ্যমে অর্জিত টাকা ভাগ বাটোয়ারার সম্পর্ক রয়েছে। ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের বিভিন্ন শালিস, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে হাতিয়ে নেওয়া মোটা টাকা বাবুল মেম্বার ও সম্রাটের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে থাকে। এসব অপকর্মে গ্রামবাসীদের কেউ কেউ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং শেষ পর্যন্ত রশিদ চেয়ারম্যানের কাছে বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এছাড়া চেয়ারম্যানের ছেলে সম্রাট হোসেনের একটি ফেনসিডিলের চালান আটকের জের ধরে দুইজনের মধ্যে লড়াই ও শত্রুতা শুরু হয়েছে। এদিকে নির্বাচনের আগে রশিদ চেয়ারম্যান বাবুল মেম্বারের কাছ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ধার করেছিলেন বলে জানানো হয়। বাবুল মেম্বার সেই টাকা ফেরত চান। এমনকি এই টাকার বিষয়টি তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিকে অবহিত করেন। সংসদ সদস্য রশিদ চেযারম্যানকে এই টাকা ফেরত দিতে বলেন। এতে রশিদ চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তিনি বাবুল মেম্বারকে বলেন, ‘এই টাকা তো তোর নমিনেশন বাবদ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া তুই বিনা ভোটে মেম্বার হয়েছিলি। তুই আবার ঋণ হিসেবে এটা দাবি করছিস কেন?’
এরকম কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রশিদ চেয়ারম্যান তার ছেলে সম্রাটকে মোবাইল ফোনে বাজারে আসতে বলেন। সম্রাট তার সহোদর সুমন হোসেনসহ বেশ কয়জন সন্ত্রাসীকে সঙ্গে নিয়ে বাজারে আসেন। এরপর রশিদ চেয়ারম্যান নিজেই বাবুল মেম্বারকে দুপুরের দিকে শত শত লোকের সামনে চড়-থাপ্পড়, লাথি মারতে থাকেন। চেয়ারম্যানের ছেলে সম্রাট-সুমনও সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা চালায়।
সন্ত্রাসী হামলায় বাবুল মেম্বার মারাত্মক আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে বহনকারী ইজিবাইক থেকে সন্ত্রাসী রশিদ বাহিনী তাকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে নেয়। এরপর স্থানীয় লোকজন অনেক চেষ্টা করে তাকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
এই ঘটনা জানতে পেরে শার্শা উপজেলা আাওয়ামী লীগের নেতারা ঘটনাস্থলে যান এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
আব্দুর রশিদ চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে আমরা সেটা পরিষদে বসে মিটমাট করার চেষ্টা করছি।’
বাবুল মেম্বারের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামীর মাথায় প্রচ- আঘাতের কারণে তাকে যশোর কুইন্স হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিটি স্ক্যান করার পর যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’