নড়াইল প্রতিনিধি
যশোরে ট্রেন দুর্ঘটনায় নড়াইলে একই পরিবারের তিনজনসহ নিহত ৪ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত প্রকৌশলী হীরকের স্ত্রী শাওন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি। হীরকের একমাত্র সন্তান দেড় বছরের শিশু হুমায়রার হাত ভেঙে গেছে। সেও একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় নড়াইলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের এক নজর দেখতে এলাকার অসংখ্য মানুষ তাদের বাড়িতে ভীড় করেন। এই ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা এবং বিদেহী আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করেন।
শুক্রবার বিকেলে নড়াইল শহরের ভওয়াখালী এলাকার মৃত সালাউল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে প্রকৌশলী হিরক ভূঁইয়া (৩৫), তার বড় বোন শিল্পী বেগম (৪২), স্ত্রী শাওন (৩০), ভাতিজি রাইসা (৭) এবং তার বন্ধু শহরের রূপগঞ্জ এলাকার মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে ব্যবসায়ী আশরাফুল আলম (৩৪) অভয়নগরের এলবি টাওয়ারে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার পথে নওয়াপাড়া ভৈরব সেতু রেলক্রসিংয়ের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। হীরক, তার বোন শিল্পী, ভাতিজি রাইসা ও বন্ধু আশরাফুল নিহত হয়। ঘটনার সময় হীরক নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। ঘটনার দিন রাত ২টার দিকে আশরাফুলের মরদেহ শহরের রূপগঞ্জে নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। রোববার দুপুর ১টার দিকে হীরক, তার বোন শিল্পী ও ভাতিজি রাইসার মরদেহ শহরের ভওয়াখালীতে আসে। নিহতদের এক নজর দেখতে এলাকার অসংখ্য মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করেন। এ সময় আশ পাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। আশরাফুলের জানাজা বেলা ১১টায় শহরের আশ্রম রোডে অনুষ্ঠিত হয়। পরে দক্ষিণ নড়াইল গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। অন্যদিকে বিকেলে বাদ আসর রূপগঞ্জ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে হীরক, শিল্পী ও রাইসার জানাজা হয়। পরে শহরের আলাদাতপুর পৌর গোরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
জানা গেছে, নিহত হীরক জেলা ছাত্রলীগ এবং আশরাফুল নড়াইল পৌর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দীন খান নিলু এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও নড়াইল পৌরসভার কাউন্সিলর শরফুল আলম লিটু শোক জানিয়েছেন। তারা বলেন, নিহত হীরক ও আশরাফুল দুঃসময়ে দলের পাশে থেকে কাজ করেছে। দলকে সংগঠিত করেছে। তারা এই শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এদিকে গত তিন বছরে হীরকের বাবা-মা ও দুই ভাই (রোগাক্রান্ত হয়ে) না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। সর্বশেষ হীরক ও তার বোন শিল্পী মারা যাওয়ায় এখন শুধু বড় বোন শাহীনা বেঁচে রইলো। পরিবারটি শহরের ভওয়াখালী এলাকায় ভাড়া থাকতো। হীরক ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন।