ঝোঁপঝাড়ে পূর্ণ ইবি, ক্যাম্পাসে সাপের আতঙ্ক

3
Spread the love


ইবি প্রতিনিধি


নানা জাতের আগাছা, লতাপাতা আর ঝোঁপঝাড়ে ভরে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)। পরিচ্ছন্নতা আর সৌন্দর্যের দিক দিয়ে বরাবরই সুনাম কুড়িয়েছে ১৭৫ একরের এ ক্যাম্পাসটি। কিন্তু করোনাকালে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় পরিচ্ছন্নতার অভাবে সর্বত্র ঝোঁপঝাড়ে ভরে উঠে ক্যাম্পাস। ফলে ক্যাম্পাসের আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে বিরাজ করছে সাপ আতঙ্ক। এসব ঝোঁপঝাড় দ্রুত পরিষ্কার না করলে যেকোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। করোনা বিপর্যয়ের কারণে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও চালু রয়েছে অফিসিয়াল কার্যক্রম। আবাসিক হলসমূহে শিক্ষার্থীরা না থাকলেও চালু রয়েছে স্ব-স্ব হলের অফিসিয়াল কার্যক্রম।


আবাসিক এলাকাসমূহে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পরিবারসহ অবস্থান করছেন করোনাকালীন দূর্যোগের শুরু থেকেই। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত আনসার সদস্যরাও রাতদিন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও জনমানুষের পদচারণা রয়েছে ঠিকই। ক্যাম্পাসে এতো বিরাট সংখ্যক মানুষের পদচারণা থাকা সত্ত্বেও সর্বত্র ঝোঁপঝাড় আর আগাছায় ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসের র্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায় কিছু এলাকা। একদিকে অন্ধকার ক্যাম্পাস অন্যদিকে সন্ধ্যা নামলেই বাড়ে বিষাক্ত সাপ ও পোকামাকড়ের আনাগোনা। সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে রাস্তাগুলোর দু’ধার দিয়ে আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে আগাছা। এছাড়া আবাসিক হলসমূহে, মফিজ লেক, ক্রিকেট মাঠ, ফুটবল মাঠ, টিএসসিসি, কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকা, একাডেমিক ভবনগুলোর আশেপাশে ও শিক্ষকদের আবাসিক এলাকাসহ সর্বত্র ভরে উঠেছে লতাপাতা, আগাছা আর ঝোঁপঝাড়ে। সর্বত্র ঝোঁপঝাড়ে পূর্ণ থাকায় অতিরিক্ত গরমে সন্ধ্যার পর বিষাক্ত সাপ ঝোঁপঝাড় থেকে বেরিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত। আবাসিক হল, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবাদে ঘুরে বেড়াচ্ছে এসব বিষাক্ত সাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ অনেক শিক্ষক সকাল-সন্ধ্যা নিয়মিত হাঁটাহাাঁটি করেন। বিষাক্ত সাপ আর পোকামাকড়ের কারণে আবাসিক এলাকাসহ রাস্তায় চলাচল অনেকটা অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা রোজদার আলী রুপম বলেন, আনসার সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালনকালে অনেক সাপ মেরেছেন। করোনার মধ্যে আমার বাসার ব্যালকনি থেকে একটি সাপ মেরেছি। ক্যাম্পাস ঝোঁপঝাড়ে পূর্ণ হওয়ায় রাত্রিকালে অনেকটা আতঙ্কের সঙ্গে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। এ বিষয়ে এস্টেট অফিসের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ডে লেবারেরা এ কাজগুলো করে থাকেন। এতোদিন ভিসি স্যার নিয়োগ না হওয়ায় বেতনের অভাবে আমরা তাদের দিয়ে কাজ করাতে পারেনি। স্যার ক্যাম্পাসে আসলে তাদের বেতন কনফার্ম করে আবার কাজ শুরু করব।

আবাসিক হলসমূহ বন্ধ থাকলেও প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা হলে আসেন বই-পুস্তকসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে। কিন্তু দীর্ঘদিন রুমগুলো বন্ধ থাকায় ও হলের ভিতর-বাইরে ঝোঁপঝাড়ে পূর্ণ থাকায় সাপ আতঙ্কে রুমে প্রবেশ করতে ভয় পান তারা জানালেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার জোদ্দার বলেন, আমরা হলগুলো পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছি। লোকবলের অভাবে হলের আশেপাশে পরিষ্কার রাখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে ভিসি স্যার আসলে স্টেট অফিসের সঙ্গে সমন্বয় করে হলের ভিতর-বাইরে পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, আমার বাসভবনসহ সর্বত্র ঝোঁপঝাড় লক্ষ্য করেছি। ক্যাম্পাসে ফিরে স্ব-স্ব বিভাগের সভাপতি ও হল প্রভোস্টদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করব। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস উপহার দেওয়ায় আমাদের লক্ষ্য।