করোনা মহামারিতে মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি উপেক্ষা নয়

7
Spread the love

করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানসিক স্বাস্থ্য উপেক্ষা করা হয়েছে। গত জুন থেকে আগস্ট মাসে ৯৩টি দেশে পরিচালিত জরিপের তথ্য উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে। বাংলাদেশেও নানা সময়ে বিভিন্ন জরিপে মহামারিকালে মানসিক স্বাস্থ্যের চরম ঝুঁকির কথা উঠে এসেছে।

করোনাভাইরাসে ব্যাপক মৃত্যুর ফলে শোক, আইসোলেশন, আয় কমে যাওয়া এবং ভয় মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলেছে। এর ক্ষতিকর দিকগুলো ইতোমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে, এখনও পাচ্ছে। এছাড়া বেকারত্ব বাড়ায় শিক্ষিত তরুণদের কাজের সুযোগও সীমিত হয়ে পড়েছে। এই হতাশাগ্রস্ত তরুণদের অনেকেই বিপথগামী হচ্ছে। এর ফলে বাড়ছে নেশা, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনসহ নানা সন্ত্রাসী কমর্কাণ্ড।

অন্যদিকে বিশ্ব মহামারি কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের সময় বিশ্বব্যাপী নার্সরা মারাত্মক মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভুগছে বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব নার্সেস (আইসিএন)। আন্তর্জাতিক সংগঠনটির প্রধান নির্বাহী ও ব্রিটিশ নার্স হাওয়ার্ডে ক্যাটন বলেন: ‘শুধু তাই নয়, নার্সদের অনেকেই নানা প্রকার নির্যাতন বা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামও তাদের জন্য যথেষ্ট সরবরাহ করা হয়নি, যার ফলে অধিকাংশ সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা মহামারি মোকাবেলায় লড়াই করে চলেছেন।’ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ সামনের সারির যোদ্ধাদের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা গেছে।

বাংলাদেশ যদিও শুরু থেকে গুরুত্ব সহকারে এমন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেছে, তবুও এ বিষয়ে আরও কাজের সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি। করোনা মোকাবেলায় সামনের সারির যোদ্ধা ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত শিশু, তরুণসহ সব ধরনের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ব্যাপক আকারে কর্মসূচি গ্রহণ করা যেতে পারে। ১০ অক্টোবর করোনা মহামারির সময়ে পালিত বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস এ আবেদনকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসে এবারের স্লোগান: ‘সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য: অধিক বিনিয়োগ অবাধ সুযোগ’। এই স্লোগানের সঙ্গে একমত পোষণ করে বাংলাদেশেও মানসিক স্বাস্থ্যে অধিক বিনিয়োগ করতে হবে। একইসঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যে করোনার প্রভাব নিয়ে আরও তথ্য ও গবেষণা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।