প্রবাসীদের শঙ্কা কাটাতে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিন

8
Spread the love

করোনাভাইরাস মহামারিতে পুরো বিশ্বের অর্থনীতি যখন বলতে গেলে স্থবির, তখনও রেমিট্যান্সে বাজিমাত দেখিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। চলমান করোনা সঙ্কটেও প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। একক মাস হিসেবে যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। রেমিট্যান্স নিয়ে গর্ব করার মতো কাজ প্রবাসীরা করলেও তাদের শঙ্কার শেষ নেই। বিশেষ করে দেশে আটকে পড়া প্রবাসীরা কাজে ফেরা নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। এ নিয়ে আন্দোলনও কম হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার সৌদি কর্তৃপক্ষের সাথে সফল দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছে। তাই পূর্ব নির্ধারিতদের পাশাপাশি বিশেষ বিবেচনায় অনেককে টিকিট দিচ্ছে সৌদি এয়ারলাইন্স। তবে যাদের ভিসার মেয়াদ শেষের দিকে এমন অনেকেই এখনো টোকেন পাননি। এ নিয়েই মূলত তাদের শঙ্কা। এ সমস্যা সমাধানে সৌদি আরবসহ শ্রমবাজারের অন্যান্য দেশগুলোর সাথে আরও জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখার বিকল্প নেই। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তারা মূলত করোনার কারণে আটকে পড়েছিলেন। তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর দাবি অযৌক্তিক নয়। যে ক’মাস করোনার কারণে আটকা ছিল, ততো মাস ভিসার মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। এতে প্রবাসীরাও যেম তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে, তেমনই ভিসাদাতা দেশগুলোও লকডাউন পরবর্তী বিধ্বস্ত সময় মোকাবেলা করে পূর্বের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রশংসনীয় কিছু কাজ করেছে। তবে এতে আত্মতৃপ্তির কোনো সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, আটকে পড়া প্রবাসীদের কর্মস্থলে যথাসময়ে পৌঁছানোর পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার খোঁজার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য বিদেশে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের আরও উদ্যোগী হতে হবে। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে নির্দেশনা বা নীতিমালাও ঠিক করে দিতে পারে। পুরনো শ্রমবাজারের ওপর ভরসা করে থাকলে করোনা পরবর্তী সময়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থানে বড় ধরনের ধাক্কা খাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এজন্য এখন থেকেই এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়ে গর্ব করার যে সুযোগ প্রবাসীরা করে দিয়েছে, সেই ধারা অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট হওয়া জরুরি। আমাদের প্রবাসীরা একটু সহায়তা পেলে নিজেদের মেধা ও শ্রম দিয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন করতে পারেন, সেটা ইতোমধ্যে প্রমাণিত। এখন সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রমাণ করতে হবে যে, তারাও প্রবাসীদের সহায়তা করতে বদ্ধপরিকর। সরকার যদিও এটা প্রতিনিয়ত প্রমাণ করার চেষ্টা করছে, তবুও করোনা মহামারি তাদের আবারও কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছে। এ পরীক্ষায় সবাইকে উত্তীর্ণ হতেই হবে। তাহলে করোনা মহামারি মোকাবেলা করে বাংলাদেশ স্বাভাবিক গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।