করোনাভাইরাস যেখানে সবকিছু থমকে দিয়েছে, তখন আরও দুঃসংবাদের মুখোমুখি হচ্ছি আমরা। গত কয়েকদিনে একাধিক ধর্ষণের খবর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাহাড়, যশোর থেকে সাভার, গাইবান্ধা, সিলেট কিংবা রাজনৈতিক সহকর্মী; নারী কোথাও নিরাপদ নয়। এ যেন এক হৃদয়বিদারক অশনিসংকেত। এরমধ্যে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক নারী। ৯ জন ধর্ষক একটি আদিবাসী চাকমা পরিবারের ঘরে ঢুকে বাবা আর মাকে আটকে রেখে সারারাত প্রতিবন্ধী মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। একইদিনে যশোরেও দু’জন কিশোরী মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণবিরোধী প্রবল জনমতের চাপে পাহাড়ের ধর্ষকদের গ্রেপ্তারে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সিলেটের ঘটনায়ও নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা আশা করি, ধর্ষণের সবগুলো ঘটনায় অপরাধীরা দ্রুত গ্রেপ্তার হবে। এ অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে, যা কখনোই কাম্য নয়। সিলেটে শুক্রবার সন্ধ্যায় এমসি কলেজ হোস্টেল এলাকায় বেড়াতে গিয়েছিলন এক দম্পতি। এসময় ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয়দানকারী সাইফুর, শাহ রনিসহ কয়েকজন স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে। এ ঘটনায় পুলিশ গিয়ে হোস্টেলের সামনে থেকে ধর্ষণের শিকার নারীকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে দুপুরে ক্যাম্পাসের ফটকের বাইরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা এসময় সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। পুলিশও ধর্ষকদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে। এসব ঘটনাপ্রবাহ ইতিবাচক। তবে শেষ পর্যন্ত ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের কোনো বিকল্প নেই। ধর্ষণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে শুধু আইন প্রণয়ন যথেষ্ট নয় বলে আমরা মনে করি। এজন্য প্রয়োজন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও সামাজিক আন্দোলন। নারীর অগ্রগতির পথে এ ঘৃণ্য কর্মকা- বিরাট অন্তরায়। এজন্য কঠোরভাবে আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে ধর্ষণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।