টেকসই স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিতে ফার্মাসিস্টদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে: উপাচার্য

3
Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার//

বিশ্ব ফার্মাসী দিবস উপলক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে গতকাল ২৫  সেপ্টেম্বর রাত আটটায় এক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। ফার্মেসী ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. আশীষ কুমার দাসের সভাপতিত্বে  খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসী ডিসিপ্লিন ও ফার্মেসী এলামনাইয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। তিনি বলেন, সত্যিকারার্থে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে হাসপাতালসহ ওষুধ উৎপাদন, বিপনন, উদ্ভাবন সবক্ষেত্রেই ফার্মাসিস্টদের কাজে লাগানো দরকার। আমাদের দেশে ওষুধ শিল্পের প্রসার আশাব্যঞ্জক। কিন্তু সেই ওষুধ ভোক্তা পর্যায়ে কার্যকরভাবে ব্যবহার এখনও নিশ্চিত হয়নি। হাসপাতালে ডাক্তার, ফার্মাসিস্ট এবং নার্স এই ত্রয় হতে পারে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সেই প্যাটার্নই রয়েছে এবং উন্নত বিশ্বে এটা অনুসরণ করে জনস্বাস্থ্য সেবা অধিকতর নিরাপদ ও কার্যকর করা হয়েছে। তিনি বলেন ওষুধে রোগ নিরাময় হয় ঠিকই কিন্তু ভুলভাবে, বা পরিমাণে অথবা ভুল ওষুধ সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে এবং জীবনের জন্য তা হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের দেশে রোগীরা ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ কেনে ও সেবন করে। কিন্তু তার কার্যকারিতা এবং পার্শ¦প্রতিক্রিয়ার দিকটি জানেন না। তিনি ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের জেনেরিক  নাম ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। উপাচার্য টেকসই স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধের কার্যকরী ব্যবহার নিশ্চিতে ফার্মাসিস্টদের যথাযথভাবে কাজে লাগানোর আহবান জানান। তিনি এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত পোস্টার প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নামও ঘোষণা করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। তিনি বলেন মানুষের আবির্ভাবের পরপরই মানুষ লতাগুল্ম,ফলমূল খেয়ে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে। প্রকৃতির ওপরই নির্ভর করেছে। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে ওষুধ আবিস্কার ও তার রসায়ন নিয়ে কাজ হচ্ছে। এখন ওষুধ এক কার্যকর উপাদান। কিন্তু আমরা মুড়িমুড়কির মতো ওষুধ খাচ্ছি, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানি না। এর জন্য জনস্বাস্থ্যের ওপর হিতেবিপরীতও হচ্ছে। ওষুধের কার্যকরিতা বুঝানোর জন্য, ওষুদের মাননিয়ন্ত্রণ, নতুন ওষুধ আবিস্কার থেকে সর্বত্র  ফার্মসিস্টদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি নকল ওষুধের বিষয়ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ওয়েবিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিপ্লিনের সিনিয়র প্রফেসর ড. সমীর কুমার সাধু। তিনি দিবসের প্রতিপাদ্যসহ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, বর্তমান বিশ্বে ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা ও আমাদের দেশে ফার্মাসিস্টদের অবস্থান ও অবস্থা সর্ম্পকে আলোকপাত করেন। আলোচনায় অংশ নেন ফার্মেসী এলামনাইয়ের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আন্দালীব, কানাড থেকে সাইফুল্লা আল মামুন, নাসিরুদ্দীন গাজী, মাহবুব আলম। সঞ্চালনা  ও উপস্থাপন করেন এলামনাইয়ের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবাল আহমেদ।

ওয়েবিনারে দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফার্মাসিস্ট নিয়োগ এবং তাদেরকে ক্যাডার সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়। এছাড়া দেশে ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে আশাব্যঞ্জক উন্নতি হলেও ওষুধ আবিস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করে সে ধরনের ল্যাবরেটরির সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলার ওপরও জোর দেওয়া হয়।