মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
ধানের ভাল দরের পর এবার পাটের দামে খুশি যশোরের মণিরামপুরের পাট চাষিরা। পাটের আশানুরূপ ফলন না হলেও দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। দাম ভাল পেয়ে কিছু চাষি ইতিমধ্যে পাট বিক্রি করে ফেলেছেন। আবার অনেকে পাটের আঁশ ছাড়ানো বা শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে মণিরামপুরে চার হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে পাটের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু পাটের চাষ হয়েছে চার হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় ১০০ হেক্টর কম।
এবছর বিঘাপ্রতি পাটের উৎপাদন ধরা হয়েছে সাড়ে ১৪ মণ। কিন্তু চাষের শুরুতে টানা খরা থাকায় দেরিতে চাষকরা পাটের ফলন ভাল হয়নি। তবুও দাম ভাল পেয়ে ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন পাট চাষিরা।
মণিরামপুর বাজারের আড়ৎদার অসিমকুমার বলেন, চলতি বছর শুরুতে পাটের মণ কিনেছি এক হাজার ৭০০ টাকায়। এখন মণ চলছে দুই হাজার থেকে ২২শ’ টাকায়। যেখানে গতবছর পাটের মণ ছিল মাত্র ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকা।
উপজেলার মাহমুদকাটি গ্রামের চাষি আবুল ইসলাম বলেন, একবিঘা জমিতে পাট চাষ করিছি। পাটের ফলন ভাল হয়নি। সাতমণ পাট পাব বলে আশা করছি। জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে পাট বিক্রির উপযোগী করতে ১৪ হাজার টাকা খরচ হবে। বাজারদর অনুযায়ী সাড়ে ১৫ হাজার টাকার পাট বিক্রি করা যাবে। আর পাটকাঠি বেচে সাড়ে চার হাজার টাকা পাব। ফলন কম হলেও মোট মিলে ৫-৬ হাজার টাকা লাভ হবে। ইরি ধানের পর এবার পাটের দাম ভাল পেয়ে আমি খুশি।
সরণপুর গ্রামের পাট চাষি আমিনুর রহমান বলেন, সাত বিঘা জমিতে পাট লাগিয়েছি। দুইবিঘার পাট কিছুটা খারাপ হয়েছে। সেই ২০মণ পাট এক হাজার ৯২০ টাকা করে আগেই বিক্রি করিছি। বাকি পাঁচ বিঘায় ১৫মণ করে ফলন হবে বলে আশা করছি। এখন দাম যাচ্ছে দুই হাজার ৩০০ টাকা করে। বিঘা প্রতি ১৪-১৫ হাজার টাকা খরচ পড়েছে।
পাটের বর্তমান বাজার অব্যহত থাকলে খরচের দ্বিগুণ লাভ হবে, এমনটি আশা করছেন এই চাষি।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার বলেন, আমরা পাটের বিঘাপ্রতি লক্ষমাত্রা ধরেছি সাড়ে ১৪ মণ। মাঝে খরা পড়ায় পাটের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তারপরও এবার ফলন ভাল। পাটের উচ্চমূল্য পেয়ে কৃৃৃষক খুশি। এই দাম অব্যহত থাকলে আগামীতে পাটের ফলন বাড়বে।