স্টাফ রিপোর্টার
নগরীর শেরে বাংলা রোডস্থ হাজী বাড়ির সামনে হাফেজের বস্তিতে মাদক ক্রয়-বিক্রয়ে টাকা নিয়ে দ্বন্দের জের ধরে গাজী শান্ত ওরফে শামীম (২৬) কে কুপিয়ে তার মোটরসাইকেল ও টাকা ছিনতাই মামলার দু’আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোবহান মোল্যা ৩আসামিকে আদালতে হাজির করেন। ৩ আসামি হলেন নাজিরঘাট রোডের হানিফ হাওলাদারের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (২৮), মো. ইকরাম গাজীর ছেলে মো. তুহিন (২৫) ও নাজিরঘাট শহীদ কাওসার সড়কের ইকরাম মুন্সির ছেলে মো. রাজু মুন্সি ওরফে গালকাটা রাজু (২৮)। এসময় রাজ্জাক ও তুহিনের দেয়া ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আতিকুস সামাদ পিএইচডি রেকর্ড করে তাদের ৩জনকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলার অপর দু’আসামি নগরীর গল্লামারি লিনিয়ান পার্কের পাশের বাসিন্দা মো. সেলিম হোসেনের ছেলে মো. খায়রুল ইসলাম বাবু (২৫) ও বানরগাতি ২৮, শশীভুষণ রোডের সিকদার মহাসিন হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান শিমুল (২০) কে আদালতে হাজির করে ৭দিনের রিমা-ের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সোবহান মোল্যা। রিমা- শুনানি আগামী রবিবার অনুষ্ঠিত হবে। শামীম নগরীর শেখপাড়া চামড়াপট্রি শিল্পকলা একাডেমির সামনে ফরিদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. দুলাল গাজীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, নগরীর শেখপাড়া চামড়াপট্রি শিল্পকলা একাডেমির সামনে ফরিদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া মো. দুলাল গাজীর ছেলে গাজী শান্ত ওরফে শামীমকে ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার দিকে শেরে বাংলা রোডস্থ আমতলার মোড়ে আসতে বলে রাসেল। রাসেলের ফোন পেয়ে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে শান্ত হাজী বাড়ি মোড়স্থ হাফেজের বস্তির ইয়ারুলের চায়ের দোকানের সামনে পৌছায়। পুর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামিরা কৌশলে শান্তকে হাফেজের বস্তির ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়। সেখানে হত্যার উদ্দেশ্যে চাপাতি দিয়ে কোপায় বাবু ও রাজ্জাক। অন্যান্য আসামিরা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে তাকে পিটাতে থাকে। তার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে আসামিরা শান্তর মোটরসাইকেল ও ৫২০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এঘটনায় শান্তর পিতা মো. দুলাল গাজী বাদী হয়ে ১০জনের নাম উল্লেখ ও আরো অজ্ঞাত ৩/৪জনের বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন যার নং-১১। আসামিরা হলেন নগরীর গল্লামারি লিনিয়ান পার্কের পাশের বাসিন্দা মো. সেলিম হোসেনের ছেলে মো. খায়রুল ইসলাম বাবু (২৫), শেখপাড়া বাগান বাড়ির আব্দুস সাত্তার বিশ্বাসের ছেলে কালা তুহিন (৩৪), বসুপাড়া আজাদ লন্ড্রির মোড়ের মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে রাসেল (২৬), নাজিরঘাট শহীদ কাওসার সড়কের ইকরাম মুন্সির ছেলে মো. রাজু মুন্সি (২৮), বানরগাতি ২৮, শশীভুষণ রোডের সিকদার মহাসিন হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান শিমুল (২০), ৪৬, বসুপাড়া মেইন রোডস্থ এতিমখানা মোড়ের মৃত. মোশারফ হোসেনের ছেলে আসাদুজ্জামান রাজু (৩৫), সবুজ (২৫), রাহিব (২৪), নাজিরঘাট রোডের হানিফ হাওলাদারের ছেলে আব্দুল রাজ্জাক (২৮), মো. ইকরাম গাজীর ছেলে মো. তুহিন (২৫)।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এঘটনার বিষয়ে জানা গেছে, আহত গাজী শান্ত ওরফে শামীম ও মামলার আসামিরা এক সাথে চলাফেরা করতো। তারা মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রির সাথেও জড়িত। ৭/৮ মাস আগে শান্ত ইয়াবা কেনার জন্য একলাখ টাকা নিয়ে ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপন করেন। এরপর গত ২৮ আগস্ট সে খুলনায় ফিরে আসে। তার খুলনায় ফিরে আসার কথা জানতে পেরে মাদক ক্রয়ের সেই একলাখ টাকা আদায়ের জন্য ওই পক্ষটি তাকে চাপ দেয়। অবশেষে গত ৮ সেপ্টেম্বর তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে তার মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তবে এবিষয়ে আহত শামীম পুলিশকে জানিয়েছে তাদের কাছ থেকে মাদক কেনার জন্য ৪৫হাজার টাকা নিয়েছিলেন।