স্টাফ রিপোর্টার
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতরের আওতায় ৩টি প্রতিষ্ঠানে ৪৬ জন আউট সোর্সিং কর্মী নিয়োগের টেন্ডারে সিন্ডিকেট তৈরীর অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে সিডিউল বিক্রি থেকে সরকার বিপুল পরিমানে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৮টি সিডিউল বিক্রি হলেও সিন্ডিকেট-এর কারসাজির কারণে ৩টি প্রতিষ্ঠানের ৩টি সিডিউল জমা পড়েছে। যার মধ্যে ২টি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধকারী একজন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ দফতরের আওতাধীন ৩টি প্রতিষ্ঠান খুলনা মেডিকেল সাব ডিপো, গত ১৩ আগষ্ট খুলনা বক্ষব্যাধী হাসপাতাল ও চালনার পোর্ট হেলথ অফিসের জন্য ২বছরের মেয়াদে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে ৪৬ জনবল নিয়োগের দরপত্র আহবান করা হয়। এরপর ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ দফতর থেকে ৮টি সিডিউল বিক্রি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ছিল দরপত্র জমা ও বাক্স খোলার নির্ধারিত দিন। নির্ধারিত সময় শেষে দরপত্র বাক্স খুলে মাত্র ৩টি সিডিউল পাওয়া যায়। এর মধ্যে একই ব্যক্তির মালিকানায় থাকা ২টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২টি ও ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে একটি সিডিউল জমা পড়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে মোঃ ফারুক হোসেন হেমায়েতের মালিকানাধিন কন্ট্রোক্ট কিনিং সার্ভিস লিঃ ও মাছরাঙা সিকিউরিটি সার্ভিস এবং ঢাকার মোঃ আব্দুলাহ আল হিল বাপ্পীর মালিকানাধীন গ্যানেস সিকিউরিটি সার্ভিস লিঃ।
জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ে গাইবান্ধা, ঢাকা ও খুলনার আরও ৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে সিডিউল ক্রয় করা হয়েছিল। কিন্তু সিন্ডিকেটের অব্যহত চাপের কারণে সে সব প্রতিষ্ঠান সিডিউল জমা দিতে পারেননি। আর যে প্রতিষ্ঠানগুলো সিডিউল জমা দিয়েছেন তারা নিজেরাই সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন। এ কারণে তারা আগেই নির্ধারণ করে নিয়েছেন আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগের এ কাজটি কোন প্রতিষ্ঠান করবে। সেভাবেই সিন্ডিকেট চক্র তৎপরতা চালিয়েছেন।
ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নাম না প্রকাশের শর্তে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, সিডিউল কেনার পর থেকে খুলনার একজন প্রভাবশালী নেতা তাদেরকে ফোন করে সিডিউল জমা না দেয়ার জন্য শাসিয়েছেন। সিডিউল জমা দিতে হলে তার নির্দেশনা মেনে কাজ করতে হবে। কিন্তু এ কাজটি পাওয়ার আশা করা যাবে না। কাজটি কোন প্রতিষ্ঠান পাবে সেটা আমরা ঠিক করে ফেলেছি। তাই সিডিউল ফেলে এখানে ঝামেলা না করলেই ভালো। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্নধর ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, এভাবে শাসানো হলে আর ঢাকা থেকে খুলনায় অর্থ ব্যয় করে গিয়ে সিডিউল ফেলা সম্ভব না।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা দরপত্র আহবান করে নিয়ম মেনেই সব কার্যক্রম পরিচালনা করছি। ৪৬ জন কর্মী নিয়োগে ৮টি সিডিউল বিক্রি হওয়ায় কিছুটা হতাশ। আরও সিডিউল বিক্রি হতে পারত। কিন্তু ওই ৮টি সিডিউলও জমা হয়নি। নির্ধারিত সময় শেষে বাক্স খুলে ৩টি সিডিউল পাওয়া গেছে। এঘটনায় কোন সিন্ডিকেট হয়েছে কি না তা আমি জানিনা। সি-িকেট গঠন বা আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের অনিময় প্রতিরোধে সতর্ক ও কঠোর অবস্থানেই আছি আমরা। তিনি বলেন, তার দফতরের আওতায় থাকা ৩টি প্রতিষ্ঠানের জন্য ৪টি ক্যাটাগরিতে ৪৬ জন আউটসোর্সিং কর্মী নিয়োগের লক্ষ্য রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মালী ৭ জন, নিরাপত্তা প্রহরী ১২ জন, বাবুর্চি ৩ জন ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী ২৪ জন। যাদের শিক্ষাগত যোগত্য ৮ম শ্রেনি পাশ ও বয়স ১৮ বছর থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে। এছাড়া ইতোমধ্যেই যারা আউটসোর্সিং কর্মী হিসেবে কাজ করছেন তারা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। চেষ্টা থাকবে তাদেরকেই কাজে রেখে দেয়া। যা ঠিকাদার বাছাই হওয়ার পরই আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোন নিয়োগের ক্ষেত্রেই কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন সহ্য করা হবে না।