যেখানে সরকারি কর্মকর্তারাও নিরাপদ নন

2
Spread the love

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকায় গত বুধবার একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের ঘরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে তাকে ও তার বাবাকে গুরুতর আহত করে। গণমাধ্যমে ঘটনার বিবরণে জানা যায়: বুধবার রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর ওই হামলা চালানো হয়েছে। গুরুতর আহত ওয়াহিদাকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। আজ পর্যন্ত ইউএনও ওয়াহিদার অবস্থা সংকটজনক। তার মাথার খুলি ফেটে গিয়ে মগজে ঢুকে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার বিকালে হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকার এনে জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ওয়াহিদার স্বামী মেজবাহুল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাদের তিন বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে। ওয়াহিদা খানমের উপরে এই হামলায় পুরো জাতি বিস্মত। আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৪ জনকে শুক্রবার ভোরে র‌্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে হাকিমপুর উপজেলার কালীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা হলেন, ঘোড়াঘাট উপজেলার ওসমানপুরের আবুল কালামের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন এবং রানীগঞ্জের আমজাদ হোসেনের ছেলে আসাদুল ইসলাম। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তার দুজনকে রংপুরে র‌্যাব-১৩ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জানিয়েছেন স্থানীয় ওসি আমিরুল ইসলাম।

উপজেলা পরিষদের একজন সর্বময় কর্তাব্যক্তিকে রাতদুপুরে বাসায় ঢুকে হামলার ঘটনা সত্যিই অবিশ্বাস্য। যেখানে নিরাপত্তা কর্মীসহ সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। আরও দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে এই হামলাকারীরা সরকারি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। একজন সরকারি কর্মকর্তার জীবনের নিরাপত্তা যেখানে প্রশ্নবিদ্ধ, সেখানে দেশের আপমর মানুষের নিরাপত্তা আসলেই অত্যন্ত ঝুঁকির ভেতর আছে বলে আমরা মনে করি। আমরা আরও মনে করি সরকারের রংপুর এলাকায় কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য আনসার বাহিনী মোতায়েনই যথেষ্ট নয়। ঘটনা তদন্ত করে এই ঘটনার জন্য কঠিন শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। নতুবা দেশের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর জনগনের আস্থা থাকবে না।