চার হাত-পা বিকলাঙ্গ, নাম নেই ভাতার তালিকায়

0

আনোয়ার হোসেন, মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি >>

পাড়ার শিশুদের বইখাতা নিয়ে ছুটতে দেখলে স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছে জাগে শিশু রোহান হোসেনের (৭)। বাবা মায়েরও বড় আশা স্কুলে পড়িয়ে ছেলেকে মানুষ করবেন। কিন্তু একটা হুইল চেয়ারের অভাবে মিটছে না তাদের সেই আশা।

রোহানের চার হাত-পা জন্ম থেকে বিকলাঙ্গ ; পেনসিলের মত চিকন। হাত পায় কোন শক্তি না থাকায় চলাফেরা করতে পারে না সে। বাবা মা কোলে করে নিয়ে যেখানে রাখেন, সেখানেই বসে বা শুয়ে থাকতে হয় তাকে। আর খাওয়া দাওয়াসহ সব প্রয়োজন মেটে বাবা-মাকে দিয়ে।

এই অচল শিশুটির নাম স্থান পায়নি ভাতার তালিকায়। সমাজসেবা অফিসের কেউ আজও তার খোঁজ নেয়নি। স্থানীয় ইউপি মেম্বরের চাহিদা মেটাতে না পারায় সে ভাতা বঞ্চিত রয়েছে।

রোহান যশোরের মণিরামপুর উপজেলার গালদা বাবু পাড়ার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। আনোয়ার হোসেন হতদরিদ্র নির্মাণ শ্রমিক। ১২ বছর আগে কাজ করতে গিয়ে চলন্ত মেশিনে তার বাম হাতের তিনটি আঙ্গুল কাটা পড়ে। তিনি নিজেও প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার যোগ্য।

বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছেলেকে কোলে করে আনেন আনোয়ার হোসেন। ওই সময় কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, আমার দুই ছেলে মেয়ে। ছেলেটির জন্ম থেকেই হাত-পা অকেজো। অনেক চিকিৎসকের কাছে নিয়েছি; কাজ হয়নি। ছেলেটা নিজে চলাফেরা করতে পারে না। আমরা স্বামী-স্ত্রী ওরে নিয়ে বেড়াই। ছিলেটারে লেখাপড়া শিখাতে চাই। তাই গ্রামের স্কুলে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি করাইছি। আমি বাইরে কাজ করি। ওর মা কোলে তুলে স্কুলে আনা নেওয়া করেন। একটা হুইল চেয়ার হলে কষ্ট কমতো। ওর জন্য একটা ভাতার কার্ড করাতি অনেকবার ঘুরিছি। সমাজসেবা অফিসে কাগজপত্র দিছি। কাজ হইনি। গ্রামের মেম্বর ইকরামুল হকের কাছে গিছি। সে বলেছে,খরচপত্র ছাড়া হবে না। আমি গরিব মানুষ। খরচ কনতে দেব।

এই ব্যাপারে মেম্বর ইকরামুল হক বলেন, খরচ চাওয়ার বিষয়টি সত্যি না। ছেলেটির ভাতার জন্য সমাজসেবা অফিসে কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে। এবার সে ভাতা পাবে।

মণিরামপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, প্রতিবন্ধী জরিপের কাগজপত্র নিয়ে আমাদের বরাদ্দ চাইতে হয়। ওই শিশুর জরিপকার্ড থাকলে তারজন্য ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।