যশোরে কিশোর নিহতের ঘটনায় কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত!

1
Spread the love

উদিসা ইসলাম

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে গত ১৩ আগস্ট তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাসিমা বেগম। এ ঘটনায় গঠিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করেছেন। নিয়মানুযায়ী এখন সেটি কমিশনে উত্থাপন করে প্রতিবেদনের সুপারিশ বিবেচনা করে মন্ত্রণালয়ের কাছে করণীয় জানিয়ে দেওয়া হবে। সোমবার সন্ধ্যায় এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বিকেলে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। সঙ্গে কাগজপত্র, ভিডিও, সাক্ষী জমা দিয়েছে। এখনও পুরোপুরি দেখার সুযোগ হয়নি। তবে কর্মকর্তাদের সম্প্রক্ততা ও অবহেলার সত্যতা মিলেছে।

 তদন্ত কার্যক্রম বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বিশেষ কোনও নির্দেশনা তদন্ত কমিটিকে দেওয়া ছিল না। আমি  কমিটিকে বলেছিলাম, ‘যা পেয়েছো তাই লিখবে। দোষী যারা তাদের উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে। তারা এলাকা পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে এবং স্থানীয় থানার তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে স্বাধীনভাবে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। এর আগে ১৪ আগস্ট এক অফিস আদেশে কমিশনের উপ-পরিচালক এম রবিউল ইসলামকে প্রধান করে দুই সদস্যের এই কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলে কমিশন। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আসলে কীভাবে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে মানবাধিকার লংঘন বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ এবং দায়িত্বশীলদের দায়িত্বে কোনও অবহেলা ছিল কি না সে সব বিষয় কমিটিকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়। কমিশনের সহকারী পরিচালক মো. আজহার হোসেন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

তথ্যানুসন্ধানে কমিটি জানতে পারে, গত ৩ আগস্ট শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের হেডগার্ডকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। কমিশন তার পাঠানো চিঠিতে এর উল্লেখ করে লিখেছে, অনুসন্ধানের স্বার্থে ওই ডায়েরির কপি ও ঘটনার পরবর্তীকালে এ বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপ সংক্রান্ত বিষয়ে অফিসার ইনচার্জ, কোতোয়ালি মডেল থানা, যশোর-এর বক্তব্য শোনা প্রয়োজন।

চেয়ারম্যান নাসিমা জানান, ওসি আসতে পারেননি এবং তিনি উপ-পরিদর্ককে পাঠিয়ে তার মাধ্যমে তথ্য উপাত্ত সরবরাহ করেছেন। কী তথ্য দেননি ডেকে পাঠাতে হলো প্রশ্নে তিনি বলেন, এই কেন্দ্রের ঘন্টা নিয়ে ৩ তারিখ একটি জিডি হয়েছিল। তদন্ত কমিটির মনে হয়েছে তদন্তের স্বার্থে সেই জিডির কপি দেখা জরুরি। উল্লেখ্য, ১৩ আগস্ট দুপুরে যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাটে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন কিশোরের মৃত্যু হয়, আহত হয় আরও অন্তত ১৫ জন। শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বরাতে পুলিশ প্রথমে বলে, বন্দি কিশোরদের ‘দুই পক্ষের সংঘর্ষে’ হতাহতের এ ঘটনা ঘটেছে। পরে আহত কিশোররা অভিযোগ করে, কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের দফায় দফায় মারধর করে, তাতেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে পরেরদিনই সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং মন্ত্রণালয় থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়।