খুলনায় ৪ খুন: ওসি শফিকুলকে বদলি

3
Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার

খুলনার খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামে জাকারিয়া বাহিনীর গুলিতে তিন গ্রামবাসী ও ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর পিটুনিতে জাকারিয়া বাহিনীর এক সদস্যসহ চারজন নিহতের ঘটনায় খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শফিকুল ইসলামকে নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে সোয়াতে বদলি করা হয়েছে।

এছাড়া খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) এস এম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার এ তথ‌্য নিশ্চিত করেছেন।

উপ-কমিশনার কানাই লাল সরকার জানান, খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শফিকুল ইসলামকে নিরস্ত্র পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে মঙ্গলবার সোয়াতে বদলি করা হয়েছে।

এছাড়া চার খুনের আগে-পরের ঘটনা সংক্রান্ত সার্বিক বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) এস এম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশিকিউশন) মো. আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শিপ্রা রাণী দাস।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা মঙ্গলবার থেকেই মশিয়ালী গ্রামের ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে বলে জানান উপ-কমিশনার কানাই লাল সরকার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেএমপির এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের আগে-পরে খানজাহান আলী থানার ওসি এসএম শফিকুল ইসলামের কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সেগুলোও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া গ্রামবাসীসহ স্থানীয়দের অভিযোগও গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে।’

এদিকে গুলি করে তিনজনকে হত্যা করার মূল হোতা বহিস্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ জাকারিয়া হাসান ও তার ভাই মিল্টনসহ বাকি ১৮ জন আসামি এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। গত পাঁচ দিনেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

পুলিশের অপর একটি সূত্র জানায়, মশিয়ালী গ্রামের ট্রিপল হত্যা মামলার আসামি খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সহ-সভাপতি শেখ জাফরিন হাসান, আরমান, জাহাঙ্গীর ও রহিম রিমান্ডে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব হচ্ছে না।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুজিবর নামে মশিয়ালী গ্রামের এক ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার সম্পাদক জাকারিয়া হাসান এবং তার ভাই জাফরিন ও মিল্টন পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় গ্রামের বেশ কয়েকজন জাকারিয়ার বাড়িতে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যান। সেসময় জাকারিয়ার সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে জাকারিয়া, জাফরিন ও মিল্টন তাদের ওপর অতর্কিতে গুলিবর্ষণ করেন। গুলিতে মশিয়ালী গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম, গোলাম রসুল ও সাইফুল ইসলাম নিহত হন।

অপরদিকে, বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর গণপিটুনিতে জাকারিয়া বাহিনীর সদস্য ও জাকারিয়ার চাচাতো ভাই জিহাদ শেখ মারা যান। এ ঘটনার পর খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগ থেকে জাকারিয়াকে বহিস্কার করা হয়।