বাংলাদেশে ৫৯০ বার জিন পরিবর্তন করেছে করোনাভাইরাস: গবেষণা

3
Spread the love

ঢাকা অফিস

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস এখন পর্যন্ত ৫৯০ বার জিন পাল্টেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ শিল্প ও বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। ১৭১টি কেসের সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে এই ফলাফল পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তারা বলছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলোর করোনাভাইরাসের মিল বেশি। রবিবার ( ১৯ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবের প্রধান সেলিম খান। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে ২২২টি। এরমধ্যে তার নেতৃত্বে গবেষক দলটি সর্বোচ্চ ১৭১টি করোনাভাইরাস কেসের সিকোয়েন্সিং করেছে।

এই গবেষক দল গত ২৩ মে থেকে করোনাভাইরাসের জিন রহস্য বের করার কাজ শুরু করে। দলে ৯ জন বিজ্ঞানী, ৫ জন ভাইরোলজিস্টসহ ২০ জন কাজ করছেন। গত ২৬ মার্চ প্রথমবারের মতো তারা করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করেন, যা আন্তর্জাতিক তথ্যভা-ার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফুয়েঞ্জা ডাটাতে (জিএসআইডি) প্রকাশিত হয়। গবেষক দলের সদস্যরাড. সেলিম খান জানান, জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের উৎসÍকোন দেশ থেকে এসেছে, এর গতি-প্রকৃতি, বিস্তার ও কন্ট্রোলিং বোঝা যাবে। এর ফলে এটি নিয়ে কাজ করা সহজ হবে। তিনি জানান, ‘বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে তার জিনোমিক লেভেলে ৫৯০টি ও প্রোটিন লেভেলে ২৭৩টিরও অধিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। ড. সেলিম খান বলেন, ‘জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে ভাইরাস যে অ্যান্টিজেন তৈরি করে, তা কোন কোষে পরিবর্তন হচ্ছে তা জানতে পারলে ভ্যাকসিন তৈরিতে সহায়তা করবে। আমাদের দেশের করোনাভাইরাসের সঙ্গে ইউরোপের ভাইরাসের মিল বেশি। তবে আমরা সব দেশের স্ট্রেইন পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রোটিনের সংখ্যা ১ হাজার ২৭৪। আমাদের দেশে ৬১৪ নম্বর প্রোটিনটা বারবার চেঞ্জ হচ্ছে, এ জন্য সংক্রমণ বাড়ছে। ৬১৪-জি করোনাভাইরাস স্ট্রেইনটি সিকোয়েন্সিংয়ে শনাক্ত হয়েছে; যা বাংলাদেশে সংক্রমণের প্রধান কারণ।’

উপস্থিত গবেষক দলের সদস্যরাবিসিএসআইআর’র বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের পাশাপাশি কোভিড-১৯ রোগীর নমুনায় সহাবস্থায় অন্যান্য আরও প্যাথজেনের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন। এই পর্যায়ে বিজ্ঞানী দল সেই জীবাণুগুলোর উপস্থিতিতে সংক্রমণের তীব্রতার সম্ভাব্য যোগসূত্র নির্ধারণের ব্যাপারে গবেষণা চালাচ্ছেন। এছাড়াও বিসিএসআইআর’র বিজ্ঞানীরা কোভিড-১৯ রোগীর নমুনায় অন্যান্য মাল্টি-ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট জিনের উপস্থিতি শনাক্ত করতে সমর্থ হয়েছেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান গত মে মাসে দেশের ৮টি বিভাগ থেকে ইনফেকশন রেট ও জনসংখ্যার পরিসংখ্যানিক ভিত্তিতে সর্বমোট ৩০০ করোনাভাইরাস কেসের সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করার জন্য জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি, বিসিএসআইআর-কে একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন।