খুমেকে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর অভিযোগ বাড়ছে, অস্বীকার পরিচালকের

1
Spread the love


স্টাফ রিপোর্টার:


করোনা মহামারীর এই সময়ে রোগী কমেছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তারপরও চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ ও সুচিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ দিন দিন বাড়ছে। তবে এসব অভিযোগের কোন তোয়াক্কা করছেন না খুলনা মেডিকেল কলেজের পরিচালক। বরং আরও বলছেন রোগীরা ডাক্তারদের ধন্যবাদ না জানালে তারা কোথাও সেবা পাবে না।


গত ০৬ জুলাই গভীর রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান খুলনার সাবেক ফুটবলার ও ব্যবসায়ী মোঃ হানিফ শেখ। তার পরিবারের অভিযোগ ০৫ জুলাই হানিফ শেখ কে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তার সঠিক চিকিৎসা হয়নি। নিহতের স্ত্রী কাকলি বেগম জানান, তার স্বামীকে নিয়ে যাওয়ার পর ফু কর্ণারে ভর্তি করা হয়। সেখানে কোন চিকিৎসক তাকে দেখেনি। চিকিৎসক বা নার্সদের ডাকা হলে তারা খারাপ ব্যবহার করেছেন। শ^াসকস্ট হলে অন্যএকন রোগীর অক্সিজেন খুলে তাকে দেওয়া হয়। ০৬জুলাই তাকে আইসিইউতে নেওয়া হলে তিনি মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার চারদিন পর তার করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসে। অশ্রুসিক্ত চোখে আমার স্বামী বিনাচিকিৎসায় ডাক্তারদের অবহেলা মারা গেছেন দাবি করেন তিনি।


এমন আরো একটি অভিযোগ আসে গত ১২ জুলাই। নগরীর লোকস্ট কলোনীতে বসবাসকারী ওজোপাডিকোর ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মোরশেদ এর মাতা জাহেদা বেগমকে অসুস্থ্য অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজের জরুরী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বিনা চিকিৎসায় তার মা মারা যান দাবি তার। তিনি বলেন, জরুরী বিভাগে অক্সিজেন ছিল না। এ সময় হাসপাতালে পরিচালককে বললে তিনি বলেন, অক্সিজেন যেমন ছিল না বিদ্যুৎ ও তো নাই। এই তোমরা লাশটা বের করে দেও।


এ ব্যাপরে খুলনা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ড. রেজা সেকেন্দারকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঐ ব্যক্তিকে পুলিশে দেওয়া উচিত। উনি উনার মাকে মৃত্যুর পরে কেন হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। উনার মা হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন। এছাড়াও গত এপ্রিল মাসে খুলনা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক্স বিভাগে পা ভেঙ্গে ভর্তি ছিল গোপালগঞ্জ থেকে আসা এসএসসি পরীক্ষার্থী রহমত। তার একটি অস্ত্রপাচারের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু হাজার বলেও হাসপাতালের চিকিৎসকদের দিয়ে অস্ত্রপাচার করা সম্ভব হয় নি। পরে নিরুপায় তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্রপাচার করা হয়। বলেছিলেন রহমতের দুলাভাই কলিং আরজু।


এ বিষয়ে খুলনা চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক ও আওয়ামী লীগ নেতা মফিদুল ইসলাম টুটুল বলেন, আমার চাচা অসুস্থ্য হলেও আমরা খুলনা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা পায়নি। পরে তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই সময়ে আমার চাচীও মারা যান। আসলে এই ধরনের পরিস্থিতি কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।


এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ড. রেজা সেকেন্দার এর নিকট টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে চিকিৎসা না পাওয়ার কোন অভিযোগ করেনি। তিনি দাবি করেন তার হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা সঠিক আছে। তার চিকিৎসকরা জীবন বাজি রেখে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।


তিনি আরো বলেন, আপনাদের কাছে অভিযোগকারীদের বলেন, চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাতে। তা না হলে তারা কোথাও চিকিৎসা পাবে না। খুলনা মেডিকেল কলেজে প্রথম ১৯ মার্চ করোনা উপসর্গ নিয়ে বাগেরহাটের মোংলা থেকে আসা বাবুল চৌধুরী বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়ার অভিযোগ আসে। তার পরিবারের অভিযোগ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে একবার জরুরী বিভাগ একবার বর্হি বিভাগ করাতে করাতে রোগী মারা যান।