সাহেদের মামলার তদন্তভার নিতে আগ্রহী র‌্যাব

1
Spread the love

ঢাকা অফিস

রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদের প্রতারণা মামলার তদন্তভার নেওয়ার জন্য যেসব আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে, সে অনুযায়ী র‌্যাব কার্যক্রম গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন এই বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

বুধবার (১৫ জুলাই) বিকাল তিনটার দিকে র‌্যাবের সদর দফতরে সাহেদের গ্রেফতার পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন র‌্যাব ডিজি।

সাহেদের মামলা তদন্ত করছে পুলিশ, আর অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব— এতে র‌্যাব বিব্রত কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা বিব্রতবোধ করলে প্রতারণার অভিযোগে সাহেদকে গ্রেফতার করে আনতাম না। এতেই বোঝা যায় যে বিব্রতবোধ করার কোনও প্রশ্নই আসে না। এই মামলার তদন্তভার গ্রহণের জন্য যে প্রক্রিয়া আছে, সেটি মেনেই আমরা কার্যক্রম গ্রহণ করবো।’

‘রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আমরা ছবি দেখেছি তাকে গ্রেফতারের সময় তার কোমরে পিস্তল ছিল। এমন একটি অস্ত্র তার কাছে রেখে ছবি তোলায় র‌্যাব কতটুকু দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে’? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘এটা আমি দেখিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমেই বলেছি, সাহেদ খুব ধুরন্ধর প্রকৃতির। সে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তির সঙ্গে ছবি তুলে প্রতারণা করার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করতো। এভাবে গণ্যমান্যদের বিভ্রান্ত করতো। সে স্থান পরিবর্তনের জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকতো। এজন্যই তার উত্তরার অফিসে জালনোট, জুতো ও সুটকেস ভরা কাপড় পাওয়া গেছে।’

র‌্যাবের ডিজি বলেন, ‘রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের কাছে যারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তারা র‌্যাবের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন। আমরা তাদের আইনগতভাবে অভিযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়াও আইগতভাবে আমরা তাদেরও সহযোগিতা করছি এবং করবো।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে রিজেন্ট হাসপাতাল করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করে, এই ঘটনার পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজিকে শোকজ করা হয়। তবে মহামারির এই সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের যারা সাহেদকে সহযোগিতা করেছেন, তাদের বিষয়ে র‌্যাবের ভূমিকা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর নিজেরাই ব্যবস্থা নিচ্ছে। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবেই আমরা দেখছি।’

রিজেন্ট হাসপাতালের মতো দেশের অন্যান্য হাসপাতালেও বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে, সেসব হাসপাতালেও র‌্যাব এভাবে অভিযান অব্যাহত রাখবে কিনা জানতে চাইলে র‌্যাব ডিজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আপনারা জানেন, কয়েকদিন আগেও আমরা এসএইচএফ হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছি। সেই হাসপাতালের মালিক এবং প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। যেখানেই আমরা তথ্য পাচ্ছি, সেখানেই গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করছি।’

এর আগে বুধবার (১৫ জুলাই) ভোর ৫টার দিকে রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার কামালপুর গ্রামের লবঙ্গবতী খালের পাশ থেকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এ সময় তিনি নদী পার হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় সাহেদ নৌকায় ওঠার পরপরই তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেন র‍্যাবের সদস্যরা। পরে তাকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ৬ জুলাই র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এরপর থেকেই পলাতক ছিলেন হাসপাতালটির মালিক মোহাম্মদ সাহেদ। ৭ জুলাই রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়। ৯ জুলাই সাহেদের মুখপাত্র তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে এবং ১৪ জুলাই রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। বুধবার ভোরে সাহেদকেও গ্রেফতার করা হলো।