পুলিশ দিনভর বিভিন্ন স্থানে সাড়াশী অভিযানে মালামাল উদ্ধার, আটক-৪
ফুলবাড়ীগেট(খুলনা)প্রতিনিধি
খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিশিষ্ট ঠিকাদার আজিজুর রহমান পল্টুর যোগিপোলস্থ ৮নং ওয়ার্ডের বাড়ীতে ২ জুলাই দিবাগত রাতে ডাকাতির ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। মুখোশধারী ডাকাতরা পল্টুসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেধে রেখে নগদ টাকা,স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ দিনভর বিভিন্ন স্থানে সাড়াশী অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত রাজিব, রবিউল, রাসেল ও ইউসুফ নামের ৪ জনকে আটক করেছে। এদের কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের একটি সুত্রে জানাগেছে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত আটককৃতদেরকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছিলো।
জানাগেছে, আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুর রহমান পল্টুর যোগিপোল ৮নং ওয়ার্ডের বাড়ীতে ২ জুলাই দিবাগত রাত আড়াইটায় মুখোশধারী ডাকাতরা ঘরের দরজা খোলা পেয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে পল্টুর মেয়ে তিন্নি(১৪) এর গলায় রামদা ধরে পার্শবত্বি পল্টুর ঘরের দরজা খুলতে বাধ্য করে। পল্টুর মেয়ের ডাক শুনে দরজা খুলে দিলে ডাকাতরা তাদেরকে কিছু বুঝে উঠার আগেই হাত বেধে ফেলে। ডাকাতরা অস্ত্র ঠেকিয়ে চাবি নিয়ে আলমেরীর মধ্যে থেকে সোনার আংটি, ব্রেসলেট, চেইন, হারসহ প্রায় ১৪/১৫ ভরী স্বার্ণালঙ্কার এবং অয়্যারড্রপের মধ্যে থাকা নগদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করতে গিয়ে খানজাহান আলী থানার মোট ৪০ পুলিশ সদস্য যখন করোনায় আক্রান্ত তখন সুযোগ সন্ধানীরা এলাকায় এসে ডাকাতি সংগঠিত করলো।
আওয়ামীলীগ নেতা পল্টু বলেন, আমার ছোট ছেলে ঘরের দরজা খুলে পাশর্^বর্তি আমার ভাইয়ের ঘরে ক্যারামবোর্ড খেলছিল। আমার ছোট মেয়ে তিন্নি ঘরের মধ্যে ঘুমানো ছিলো। তার মুখে গামছা পেচানো এবং অপর জনের মুখে মুখোশ পরা দুই ব্যক্তি আমার মেয়ের ঘরে প্রবেশ করে তাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে আমাদের রুম খুলতে বলে। আমাদের রুম খুলে দিলে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে পিস্তল, রামদা এবং ছুরি ধরে বেধে ফেলে। তারা আলমেরীর চাবী সহ কোথায় কি আছে দিয়ে দিতে বলে। এ সময় তারা আলমেরীর এবং অয়্যারড্রপের মধ্যে থাকা নগদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ও ১৪/১৫ ভরী স্বার্ণালঙ্কার মাত্র আধা ঘন্টার মধ্যে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর খবর পেয়ে সকালে সহকারী পুলিশ কমিশনার দৌলতপুর জোন বায়জিত ইবনে আকবর, খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এবং জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও খানজাহান আলী থানার যুবলীগের আহবায়ক মো. সাজ্জাদুর রহমান লিংকন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে এই ঘটনায় ডাকাতরা এলাকা ছাড়ার আগেই থানা পুলিশ বিভিন্ন স্থানে সাড়াশী অভিযানে বের হয়। খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে যোগিপোল এলাকা থকে রাজিব, সেনপাড়া এলাকা থেকে রাসেল, রবিউল, মাইলপোষ্ট এলাকা থেকে ইউসুফকে পুলিশ আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা, কিছু স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ সুত্রে জানাগেছে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত থানায় পুলিশের উধর্বতন কর্মকর্তা আটককৃতদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করছিল।
এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযানের কথা স্বীকার করে বলেন যাদেরকে আটক করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে কিছু টাকা এবং স্বার্ণলঙ্কার উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে তাদেরকে জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে, বিস্তারিত পরে জানাতে পারবো।