প্রত্যাশিত গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭২ দশমিক ৬ বছর

7
Spread the love

ঢাকা অফিস

দেশের মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু বেড়েছে। ২০১৯ সালের হিসাবে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ৭২ দশমিক ৬ বছর, যা ২০১৮ সালে ৭২ দশমিক ৩ বছর ছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস-২০১৯’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগাঁরগাওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, বিবিএসেরর উপ-মহাপরিচালক ঘোষ সুব্রত উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক এ কে এম আশরাফুল হক।

মনিটরিং দ্য সিচুয়েশন অব ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক অব বাংলাদেশ (এমএসভিএসবি) তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের আওতায় দেশের ২ হাজার ১২টি নমুনা এলাকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের হিসাবে প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল ৭২ দশমিক ৬ বছর, যা ২০১৮ সালে ৭২ দশমিক ৩ বছর ছিল। এছাড়া ২০১৭ সালে ৭২ বছর, ২০১৬ সালে ৭১ দশমিক ৬ বছর এবং ২০১৫ সালে ছিল ৭০ দশমিক ৯ বছর। প্রত্যাশিত গড় আয়ু পুরুষের চেয়ে নারীদের বেশি। ২০১৯ সালে পুরুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু ছিল ৭১ দশমিক ১ বছর। ২০১৮ সালে ছিল ৭০ দশমিক ৮ বছর। ২০১৭ সালে ৭০ দশমিক ৬ বছর, ২০১৬ সালে ৭০ দশমিক ৩ বছর এবং ২০১৫ সালে ছিল ৬৯ দশমিক ৪ বছর। অন্যদিকে নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ২০১৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রত্যাশিত গড় আয়ু হচ্ছে ৭৪ দশমিক ২ বছর, ৭৩ দশমিক ৮ বছর, ৭৩ দশমিক ৫ বছর, ৭২ দশমিক ৯ বছর ও ৭২ বছর।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশের এখনও হাজারে ২১ জন শিশু জন্মের পর পরই মারা যায়। প্রতি হাজার জীবিত জন্ম নেয়া শিশুর ক্ষেত্রে মরণশীলতার হার দাঁড়িয়েছে ২১ জনে, যা ২০১৫ সালে হাজারে ২৯ জন ছিল। এছাড়া ২০১৯ সালে এক থেকে চার বছর বয়সী শিশুর মৃত্যু কমে হয়েছে হাজারে এক দশমিক সাত জন, যা ২০১৫ সালে ছিল দুজন। অন্যদিকে মাতৃ মৃত্যুর হারও কমেছে। এটি গত পাঁচ বছরে সমহারে কমেছে। ২০১৫ সালে মাতৃ মৃত্যুর অনুপাত ছিল এক দশমিক ৮১, যেটি ২০১৯ সালে কমে ১ দশমিক ৬৫ তে দাঁড়িয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, খানা (পরিবার) প্রধানের ক্ষেত্রে পুরুষ ৮৫ দশমিক চার শতাংশ এবং নারী ১৪ দশমিক ছয় শতাংশ, যা ২০১৫ সালের তুলনায় নারীদের ক্ষেত্রে বেড়েছে। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে কমেছে। ট্যাপ বা নলকূপের পানি ব্যবহার করছে ৯৮ দশমিক এক শতাংশ পরিবার, যা ২০১৫ সালে ৯৭ দশমিক নয় শতাংশ ছিল। বর্তমানে দেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম হচ্ছে ৮৮ দশমিক চার শতাংশ, যা ২০১৫ সালে ছিল ৮৮ দশমিক দুই শতাংশ। হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মের জনসংখ্যা ১১ দশমিক ছয় শতাংশ, যা ২০১৫ সালে ছিল ১১ দশমিক ৮ শতাংশ।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, দেশে বয়স্ক শিক্ষার হার (১৫ বছর বা তার বেশি) পল্লী এলাকার চেয়ে শহর এলাকায় প্রায় ২০ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। ৭ বছর বা তার বেশি বয়স্ক শিক্ষার ক্ষেত্রে এই হার প্রায় ১৭ দশমিক দুই শতাংশ। তবে ২০১৩ সাল থেকে শহর এলাকার তুলনায় পল্লী এলাকায় বয়স্ক শিক্ষার হার দ্রুত গতিতে বাড়ছে। মরণশীলতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। ২০১৯ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে মরণশীলতা ছিল চার দশমিক ৯ জন, ২০১৫ সালে এটি পাঁচ দশমিক একজন ছিল।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উন্নয়নে সঠিক তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাঠ পর্যায় থেকে বিশুদ্ধ তথ্য তুলে আনতে হবে। বিষয়টি সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, তথ্য যত সঠিক হবে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ততই বাস্তবসম্মত হবে।

পরিসংখ্যা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, এবারের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আর্থ-সামাজিক অনেক সূচকেই বাংলাদেশের চেয়ে শুধু শ্রীলঙ্কাই কিছুটা এগিয়ে। ভারত, পাকিস্তান ও নেপালসহ অনেক দেশ আমাদের পেছনে রয়েছে।