ঢাকা অফিস
করোনাভাইরাস নিয়ে সরকার অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আসলে সরকার অন্ধকার ঘরে কালো বিড়াল খুঁজে বেড়াচ্ছে। করোনা সমস্যার কীভাবে সমাধান করবে, সেটা সরকারের চিন্তার মধ্যে নেই। মূল প্রবাহ তো এখনও আসেনি। আগামী এক দুই মাস পরে এটা যখন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়বে, তখন এর মূল প্রবাহ দেখা দেবে।’
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
করোনাভাইরাস থেকে ডা. জাফরুল্লাহর রোগ মুক্তিকে কেন্দ্র করে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এসময় আরও আলোচনা করা হয় ‘করোনা বনাম বিশ্ব পুঁজিবাজার ২০২০-২১ বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট’ বিষয়ে। সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা যে আমার জন্য দোয়া করেছেন, তা অকল্পনীয়। একজন মানুষকে যে মানুষ এতো ভালোবাসতে পারে, তা আগে জানতাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘৭১-এ যুদ্ধ করে ভালোবাসা পেয়েছিলাম। এখন আবার আপনাদের ভালোবাসা পাচ্ছি।’ তাদের হাসপাতালের একটা করোনা ইউনিটে কী পরিমাণ খরচ হয় তার লিখিত বিবরণও তুলে ধরেন তিনি। করোনা থেকে দেশকে মুক্ত করতে একটা সুস্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দরকার বলে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনারা যদি আমার বাজেট প্রবাহ দেখেন, সেখানে কিছু দিক নির্দেশনা আছে। এটা জনগণের দাবি উঠানো ছাড়া, আওয়াজ তোলা ছাড়া, বাস্তবায়ন সম্ভব না।’ জাতীয় ওষুধ নীতির নিয়ম বদলালে দেশে ওষুধের দাম অর্ধেক হবে বলে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘এই পরিবর্তনের জন্য জনগণের পক্ষ থেকে আওয়াজ আসতে হবে।’
করোনা আক্রান্ত ডা. জাফরুল্লাহর চিকিৎসা করেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মামুন মোস্তাফি। আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনা নেগেটিভ হলেও বুকের ৮০ শতাংশ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু তাকে দামি ওষুধ দিলেও তা গ্রহণ করেননি। তার কথা ছিল, গ্রামের একজন মানুষ ও কৃষক যে সেবা নিতে পারেন না, তিনি তা গ্রহণ করবেন না।’
ডা. জাফরুল্লাহর করোনাজয়ের পেছনে মানসিক মনোবলের ভূমিকা সবচেয়ে বড় উল্লেখ করে ডা. মামুন বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যালে তার জন্য কেবিন রেডি করেছিলাম। কিন্তু তিনি বলে দিয়েছেন, ওখানে থেকে তার গ্রামের একজন মানুষ চিকিৎসা নিতে পারবেন না, তাই তিনিও নেবেন না। এখানে থেকে গ্রামের কোনও মানুষের মৃত্যু হলে, আমারও হবে। তার জন্য দেশের প্রতিটা মানুষের দোয়া ছিলে, আল্লাহ এই মানুষটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. বিজন কুমার শীল, ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার, ডা. নাজিব মোহাম্মদ, ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ।