দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় সরাসরি কাজ করা ফ্রন্টলাইনার্স বা সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত চিকিৎসক, সেনা, পুলিশ ও সাংবাদিকদের মৃত্যু ঘটনা বেড়ে চলেছে। করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে কয়েকদিন আগেই, মৃত্যুও ১৫শ’ ছাড়িয়েছে। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবে প্রথম দিকে আক্রান্ত ও মৃতের ঘটনা ঘটলেও বর্তমানে সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব নেই। তারপরেও বর্তমানে প্রতিদিনই অনেক ফ্রন্টলাইনার্স আক্রান্ত হচ্ছেন, দুয়েকজন করে মারাও যাচ্ছেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, তাদের অনেকে করোনা জয় করে সুস্থ হয়ে আবারও কাজে যোগ দিচ্ছেন। করোনা ভয়ংকর ছোঁয়াচে ভাইরাস জেনেও পেশাদারিত্ব, দায়িত্ববোধ, সেবাব্রত আর মানবিকতাবোধ তাদের কর্মস্থলে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে এরই মধ্যে করোনায় মারা গেছেন ৫১ জন চিকিৎসক। এর মধ্যে ৪৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আর করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৭ জন। মারা গেছেন পুলিশের ৩০ জন সদস্য। গতকাল রোববার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৯১৪ জন পুলিশ। সশস্ত্র বাহিনী ও তাদের পরিবারের সদস্য মিলে ৪ হাজার ২৫৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর ২০ জুন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৫ জন। এছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন ১০১ প্রতিষ্ঠানের ৩৯৫ জন গণমাধ্যমকর্মী। একই সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে আরো ৭ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসক সংগঠন, পুলিশ সদর দপ্তর, আইএসপিআর ও গণমাধ্যম সংগঠন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। বিষয়টি খুবই চিন্তার। ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে দেশের মানুষের চিকিৎসা, নিরাপত্তা ও তথ্য সেবা দিতে গিয়ে এই আত্মত্যাগকে আমরা স্যালুট জানাই। এই ক্রান্তিকালে বৃহত্তর স্বার্থে ফ্রন্টলাইনার্সদের সুস্থতা খুবই জরুরি। তাদের চিকিৎসার জন্য সরকার সাধ্যমত বিশেষায়িত ব্যবস্থা করার পাশাপাশি সুরক্ষা সামগ্রীর যোগান দিয়ে চলেছে। জনগণ ও বেসরকারি নানা উদ্যোগেও তাদের সহায়তা করা হচ্ছে, বিষয়টি খুবই ইতিবাচক। কর্মক্ষেত্রে তারা করোনা থেকে রক্ষা পেতে আরও সুরক্ষিত থাকুক, এই আমাদের প্রত্যাশা।