ঢাকা অফিস
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছে তার সব তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের কাছেও বিভিন্ন কেনাকাটা ও প্রকল্পের ব্যয়ের হিসাব চেয়ে পৃথক চিঠি দিয়েছে স্বায়ত্তশাসিত এই প্রতিষ্ঠানটি। রবিবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, দুদকের চিঠিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারকে পৃথক-পৃথক চিঠিতে নানা বিষয়ের তথ্য চাওয়া হয়েছে।
মাস্ক-পিপিইসহ সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটায় দুনীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদক পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছিল। জয়নুল আবেদীন শিবলীর স্বাক্ষরে তথ্য ও রেকর্ডপত্র চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এসব চিঠিতে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে চাহিত তথ্য ও রেকর্ডপত্র সরবরাহের অনুরোধ জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি/যন্ত্রপাতি (মাস্ক, পিপিই, স্যানিটাইজার, আইসিইউ যন্ত্রপাতি, ভেন্টিলেটর, পিসিআর মেশিন, কোভিড টেস্ট কিট ও অন্যান্য) ক্রয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় শুরু হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত গৃহীত প্রকল্পগুলোর নাম, বরাদ্দকৃত ও ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ এবং বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়/স্বাস্থ্য অধিদফতর/সিএমএসডি) তথ্য চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া মেসার্স জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডসহ অন্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি চেয়েছে দুদক। গত ২৬ই মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কারণে যেসব ডাক্তারকে বদলি করা হয়েছে তাদের নাম, পদবী, বর্তমান কর্মস্থল, পূর্ববর্তী কর্মস্থল, মোবাইল নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্যও চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রণব কুমার। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালকের কাছেও বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক রেকর্ড চাওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি দমনে দুদক কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আজই মাস্ক-পিপিইসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সামগ্রী ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ তিনটি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ বাহক মারফত তথ্য-উপাত্ত চেয়ে অতীব জরুরি পত্র দেওয়া হয়েছে। দুদক আইন, ২০০৪ ও দুদক বিধিমালা-২০০৭ অনুসারে এসব চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি সবাই নির্রারিত সময়ের মধ্যে এসব তথ্য ও রেকর্ডপত্র দিয়ে দুদককে সহায়তা করবেন। দুদক একটি পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধানের মাধ্যমে অপরাধ এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করতে চায়। অপরাধী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আমি আগেও বলেছি আজও বলছি এসব ক্ষেত্রে অপরাধীদের সামাজিক, পেশাগত বা অন্য কোনও পরিচয় কমিশন গুরুত্ব দেবে না। অপরাধীদের আইনের মুখোমুখি করা হবেই।