খুলনাঞ্চল রিপোর্ট
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত তৃতীয় পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দরের ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য নির্মিত একটি আবাসনে পানির ট্যাংকি ভূমির উপরে উঠে গেছে। ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত ১ নম্বর আবাসনে গক রোববার (১৪ জুন) গভীর রাতে হঠাৎ ট্যাংকিটি ভূমির উপরে উঠে যায় বলে আবাসনে কর্মরত শ্রমিকরা জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের কাজের মান খারাপ করছে বলে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে এমনটাই ধারণা করছে স্থানীয়রা।তবে কি কারণে ট্যাংকিটি মাটির উপরে উঠে এসেছে তার সঠিক কোনো তথ্য এখনও দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের মেরাউপাড়ায় অবস্থিত এক নম্বর আবাসনের একটি পানির ট্যাংকির এক তৃতীয়াংশ মাটির উপরে উঠে রয়েছে। পূর্ব-পশ্চিমমুখি ট্যাংকির পূর্ব দিকে ৩ ফুট ও পশ্চিম প্রান্তের দিকে দেড় ফুট ভূমির উপরে উঠে থাকতে দেখা যায়। জানা যায়, সরকার পায়রা বন্দরের ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের বসবাসের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। এজন্য উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নে একাধিক আবাসনের কাজ চলমান রয়েছে। দেশের স্বনামধন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে এসব আবাসনের কাজ চলছে।ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেরাউপাড়ায় ৩টি আবাসনের কাজ চলমান রয়েছে। ৩টি আবাসনের কাজ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেডের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এরমধ্যে ১ নম্বর আবাসনে ১৪৪ পরিবারের পানি সরবরাহের জন্য ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য, ২০ ফুট প্রস্থ ও ১০ ফুট গভীরতার দেড় লক্ষ লিটার পানি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি ট্যাংকি তৈরি করা হয়েছে।
ট্যাংকিটি সম্পূর্ণ কংক্রিট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। রোববার গভীররাতে ট্যাংকির চারপাশে জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে বুদবুদের মাধ্যমে ট্যাংকিটি হঠাৎ পানির উপরে উঠে আসে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী আবাসনের শ্রমিক সোহাগ ফরাজী বলেন, রাত দেড়টার দিকে ট্যাংকির চারপাশের পানিতে বুদবুদ করতে থাকে। জানতে পেরে আমরা অনেকেই সেখানে যাই। পরে হঠাৎ করে ট্যাংকিটি মাটির উপরে উঠে আসে। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কারও ধারণা মাটির নিচে জমে থাকা গ্যাসের কারণে হয়েছে। কেউ আবার নির্মাণ প্রক্রিয়ায় ভেজাল ছিল বলে ধারণা করছে। স্থানীয়দের মতে, পায়রা বন্দরে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের বসবাসের জন্য সরকার এ আবাসনের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের ইট, বালু, রড ও সিমেন্ট দিয়ে কোনো মতে দায় সাড়ার চেষ্টা করছে। সরকার একটি ঘর তৈরির জন্য যে বাজেট দিয়েছে তার সিংহভাগই অসাধু ব্যবসায়ীদের পকেটে যাচ্ছে বলেও তারা দাবি করছেন।
আবাসনের সার্ভেয়ার মো. শামীম জানান, হঠাৎ পানির ট্যাংকিটি মাটির উপরে উঠে আসায় আমরাও বিচলিত রয়েছি। কি কারণে এটি হয়েছে তা সঠিক তদন্ত ছাড়া বলা যাচ্ছে না। তবে ট্যাংকির নিচের পানির লেয়ার উপরে উঠে আসা, অতিরিক্ত গ্যাসের প্রেসার বা বালুর প্রেসারের কারণে এমনটি হয়ে থাকতে পারে বলে তারা ধারণা করছেন।
ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস কোম্পানির লজিস্টিক এডমিন অফিসার মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমরা পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা তদন্ত করে সঠিক কারণ বের করবে।