ঢাকা অফিস
বগুড়া, জয়পুরহাট, হবিগঞ্জ, নোয়াখালী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক বজ্রাঘাতে চার কৃষকসহ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ জন। বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে বজ্রপাতের এসব ঘটনা ঘটে।
বগুড়া: বগুড়ার কাহালু উপজেলার এরুইল বাজার, শাজাহানপুরের হরিণ গাড়ি গ্রাম, সারিয়াকান্দির কুড়িপাড়া চর এবং ধুনটের দেওড়িয়া গ্রামে বজ্রাঘাতে চার কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বজ্রাঘাতে কাহালুতে আহত হন তিন জন। তাদের মধ্যে একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এসব তথ্য জানান।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন, কাহালুর এরুইল গ্রামের মৃত কছিমুদ্দিনের ছেলে মোকলেছার রহমান (৫৫), শাজাহানপুরের হরিণগাড়ি গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে নুরুল ইসলাম (৪০), সারিয়াকান্দির কুড়িপাড়া চরের বুলু ম-লের ছেলে লেবু ম-ল (৩৫) এবং ধুনটের দেওড়িয়া গ্রামের দেরাস সরকারের ছেলে আবদুস সালাম (৫৫)।
এদিকে বেলা ৩টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার হরিণগাড়ি গ্রামের একটি মাঠে কৃষক নুরুল ইসলাম কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে শজিমেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একই সময় সারিয়াকান্দির কুড়িরপাড়া চরে বৃষ্টি শুরু হলে কৃষক লেবু ম-ল গরু আনতে যান। তখন বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। কাজলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, বৃহস্পতিবার দিনভর বৃষ্টিতে দেওড়িয়া গ্রামে পটলের ক্ষেতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কৃষক আবদুস সালাম ওই পানি নিষ্কাষণের জন্য বিকাল ৪টার দিকে ক্ষেতে যান। এ সময় হঠাৎ বজ্রাঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
জয়পুরহাট: বজ্রপাতে জয়পুরহাট সদর উপজেলার পারুলিয়া গ্রামে সুকোমল (৪৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বেলা সাড়ে ৩টর দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহা. শাহরিয়ার খাঁন জানান, কৃষি কাজ সেরে বাড়ির উঠানে গোসল করতে গিয়ে বজ্রপাতে সুকোমল গুরুতর আহত হন। পরে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সুকোমল ওই গ্রামের মৃত রাজেন্দ্রনাথের ছেলে।
হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বাহুবলে হাওরে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রাঘাতে শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও দু’জন। নিহতরা হলো বাহুবল উপজেলার পুঁটিজুরি ইউনিয়নের নৌয়াঐ গ্রামের দরদ মিয়ার ছেলে ওকাইদ মিয়া (১১) এবং একই উপজেলার সাতকাপন ইউনিয়নের মানিকা গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে নরছ মিয়া (১৭)। বাহুবল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জানায়, দুপুরে ওকাইদ হাওরে মাছ ধরতে গেলে বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আহত হন আরও দুজন। তাদের বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
একই সময়ে নরছ মিয়া মানিকা হাওরে মাছ ধরতে গেলে বজ্রাঘাতে আহত হন। গুরুতর অবস্থায় তাকে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
নোয়াখালী: নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার স্বর্ণদ্বীপে মাটি কাটার কাজ করার সময় দুপুরে বজ্রাঘাতে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম রফিক উল্যাহ (৪০)। তিনি সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের মধ্য চরবাটা গ্রামের বাসিন্দা। হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের এসব তথ্য জানান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রাঘাতে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম পিয়ারা বেগম (৩৩)। সে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার চরপাঁকা এলাকার হেরাস উদ্দিনের স্ত্রী। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার মৃত্যু হয়। শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ এ তথ্য জানান।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার দিকে হঠাৎ করে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।’