এম এ রহমান মাসুম
অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথগুলোয় যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রাহকরা। তারা বলছেন, করোনার শুরুর দিকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যাক্সিসলের ব্যবহার করা হলেও এখন অনেক বুথেই এসব উপকরণ নেই। এছাড়া, মানা হচ্ছে না নিরাপদ দূরত্বও। কোনো কোনো বুথে হ্যান্ডগ্লাভস ও মাস্ক ছাড়াই দায়িত্ব পালন করছেন নিরাপত্তা প্রহরীরা। গ্রাহক ও চিকিৎসকদের আশঙ্কা—এসব বুথ থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এটিএম কার্ডধারী সামির আহমেদ বলেন, ‘করোনার শুরুতে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন করা হতো। এখন বুথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা এ জাতীয় কিছু নেই।’
সামির আহমেদের মতো এটিএম কার্ডধারী একাধিক গ্রাহক বলেন, আগে বুথে গেলে ভিড় কম থাকতো। মেশিনেও টাকা থাকতো। এখন লম্বা লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। প্রায় মেশিনে টাকা থাকে না। এ কারণেও ভিড় লেগে যায়। একসময় সামাজিক দূরত্বও রক্ষা করা হয় না।
বুথে স্বাস্থ্যবিধি না মানা প্রসঙ্গে প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘এটিএম বুথ এমন এক জায়গা, যেখানে প্রচুর লোক সমাগম হয়। বুথে সবাই স্পর্শ করেন। এখন সেখানে কে করোনা আক্রান্ত বা কে সুস্থ, তা বোঝার উপায় নেই। বুথে স্যানিটাইজার অথবা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা না থাকলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে।’
এটিএম বুথে স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিটি ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. মাহবুবুর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের ডিএমডি আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা। তারা বলেন, ‘কর্মী থেকে গ্রাহক পর্যন্ত—মাস্ক ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। এটিএম বুথগুলোতেও একই সুরক্ষা দেওয়া হয়।’
অনেক বুথে নিরপত্তা রক্ষীদের হ্যান্ডগ্লাভস কিংবা মাস্ক পরতে দেখা যায় না—এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ এই তিন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘বুথগুলোয় করোনো প্রতিরোধে যথেষ্ট সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। নিয়মিত নজরদারিও করা হয়। এরপরও অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে, গ্রাহকের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চেয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিনকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী করোনার সময়ে ব্যাংকে লেনদেন সীমিত করা হয়েছে। গ্রাহকদের জরুরি সেবার জন্য সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২ টা৩০ মিনিট পর্যন্ত লেনদেনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া গ্রাহকদের টাকা তোলার জন্য ব্যাংকের শাখায় না গিয়ে এটিএম বুথ, মোবাইল ব্যাংকিং ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশপাশি এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতেও বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে প্রায় ১১ হাজার এটিএম বুথ রয়েছে। আরও এক হাজার ৬৬৬টি ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন (সিডিএম) ও ক্যাশ রিসাইকেলার মেশিন (সিআরএম) রয়েছে।