আমফানের আঘাতে খুলনা অঞ্চলে ব্যাপক নদী ভাঙন

0

স্টাফ রিপোর্টার: ঘূর্ণিঝড় সুপার সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে খুলনা অঞ্চলের সুন্দরবন উপকূলবর্তী এলাকায় ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে প্রশাসন ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও স্ব স্ব এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শুরু হওয়ার পর থেকে খুলনা ও সাতক্ষীরার নদ-নদীতে পানির উচ্চতা বেড়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি ও বাতাসের সঙ্গে পানিতে তুফান শুরু হয়েছে। পানির উচ্চতা বৃদ্ধি ও প্রচণ্ড ঢেউয়ের কারণে বিভিন্ন জায়গায় ভেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙনও শুরু হয়েছে। বাঁধ রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করছে।

এদিকে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু পাইকগাছা উপজেলা ঘুরে নির্বাচনী এলাকার শেষ সীমানা সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলা সদরে অবস্থা নিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল থেকে সেখান অবস্থান করছেন। বুধবার দুপুরে সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি কয়রার বিভিন্ন ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকা সত্বেও তিনি জীবনের ঝুকি নিয়ে ঘূর্ণিঝড় আম্পান সম্ভাব্য আঘাত হানার বিষয়ে জনগণকে আগাম সতর্ক করতে কয়রা উপজেলার দুর্গম, প্রত্যন্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য মানুষকে সতর্ক করেন এবং সাহস যোগাচ্ছেন।

ঘূর্ণিঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় থাকবেন বলে জানান সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু। তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো ঘুর্ণিঝড় থেকে রক্ষার জন্য আগেই সরকারের উর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করেছেন। প্রতিবন্ধী-শিশু-গর্ভবতী মহিলাসহ সকলকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জরুরি ত্রাণ সংগ্রহ ও মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সকলে প্রস্তুত আছে বলে তিনি জানান।

পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়ার্দ্দার জানান, ইতোমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়েছে। খাদ্য ও ত্রাণ মজুদ করা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত দুর্বলদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নে বয়ারঝাপায় ভাঙ্গাহাড়িয়া খেয়াঘাট এলাকায় ওয়াপদা রাস্তায় বুধবার সকালে ভাঙ্গন দেখা দিলে স্থানীয় চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক সংবাদ পেয়ে ভাঙন এলাকায় যান। সেখানে ভাঙন রোধে শতাধিক লোক দিয়ে কাজ শুরু করেছে।

কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা এলাকায় দুপুরের জোয়ারে পানি ওয়াবদা বাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে। এ সময় স্বাধীন সমাজকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি মো. আবু সাঈদ খানের নেতৃত্বে সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা তাৎক্ষণিকভাবে বেড়িবাঁধ রক্ষার কাজ করছে।

পাইকগাছা উপজেলার মামুদকাটীস্থ অনির্বাণ লাইব্রেরির শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক সকাল থেকে কাজ শুরু করেছেন। সতর্কতামূলক প্রচারণা ছাড়াও উদ্ধার ও ত্রাণ কাজ পরিচালনার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রভাত দেবনাথ জানিয়েছেন।