ফেসবুকে একাধিক ছাত্রীকে প্রেম নিবেদন করেন প্রধান শিক্ষক

123
Spread the love

আনোয়ার হোসেন,মণিরামপুর (যশোর) :

মণিরামপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলীর বিরুদ্ধে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ছাত্রীদের প্রেম নিবেদনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, প্রধান শিক্ষক নিজের ভ্যারিফাইড আইডি থেকে প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত কয়েকজন ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এছাড়া তিনি ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর ভাষাও ব্যবহার করেন। স্কুল থেকে বিদায় নেওয়া শিক্ষার্থীরাও তার হাত থেকে রেহায় পচ্ছেনা।

সোমবার (১৮ মে) দুপুরে প্রধান শিক্ষক হায়দার আলীর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের ভুক্তভোগী দুইজন ছাত্রী ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করে।

এদিকে ছাত্রীদের সাথে ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর কথাবার্তার কয়েকটি স্ক্রীনশর্ট চিত্র রোববার থেকে ফেসবুকে ঘুরপাক খাচ্ছে। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ওঠেছে। এমনকি তার এমন আচরণে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও। তারা সন্তানকে স্কুলে পাঠাতেও সঙ্কিত হচ্ছেন।

তবে, নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করছেন প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী। তার দাবি, কিছুদিন ধরে তার ব্যবহৃত আইডিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাকে ফাঁসানোর জন্য একটি চক্র আইডি হ্যাক করে এসব কাজ করেছে।

যদিও তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের আনা অভিযোগ কয়েকমাস আগের।

ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিযোগ, হেডস্যার ক্লাসে ঢুকে ছাত্রীদের গায়ে হাত দেন। অন্য ভঙ্গিতে সবার দিকে তাকান। আবার নিজের সাথে আমাদের আইডি যোগ করে নিয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন। আমরা কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারিনা। সম্প্রতি একজন ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। তাকেও স্যার এমন খারাপ কথা বলেন। তিনি সহ্য না করতে পেরে অবশেষে সব ফাঁস করেছেন।

ছাত্রীদের ভাষ্য, আমরা যারাই স্যারের আপত্তিকর কথার প্রতিবাদ করেছি। তাকে স্কুলে আসতে নিষেধ করেছেন তিনি। যখনই ইউএনওকে জানাবো বলি, তখন চুপ হয়ে যান। পরে আবার অন্য ছাত্রীকে ম্যাসেজ দেন।

নতুন ভর্তি হওয়া কোন ছাত্রী যেন প্রধান শিক্ষকের কুদৃষ্টির শিকার না হয় তারজন্য ভুক্তভোগী ছাত্রীদের এমন প্রতিবাদ, বলে অভিযোগকারীরা।

এরআগেও চলতি বছরের শুরুতে লিতুনজিরা নামে এক প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে নিয়ে কটুক্তি করায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন এই প্রধান হায়দার আলী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক বলেন, আমরা জেনেছি হেড স্যারের আইডিতে নাকি মাসখানেক ধরে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই তিনি রোববার (১৭ মে) পুরনো আইডি ব্লক করে নতুন আইডি খুলেছেন। আমাদের সেই আইডিতে রিকুয়েস্ট পাঠাতে বলেছেন।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী বলেন, কিছুদিন ধরে আমার আইডিটা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই সেটা বাদ দিয়ে নতুন আইডি খুলেছি। আমি সংস্কৃতিমনা মানুষ। ছাত্রীদের সাথে ভাল সম্পর্ক। এটা অনেকে সহ্য করতে পারেন না। তাই হয়তো আমার আইডি হ্যাক করে এসব কা- ঘটিয়েছে।

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, ছাত্রীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শক্ত একটি তদন্ত টিম গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।