করোনার টিকা নিয়ে কুৎসিত রূপ দেখাচ্ছে ধনী দেশগুলো

11
Spread the love

খুলনাঞ্চল ডেস্ক

সারাবিশ্ব যখন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে অধীর আগ্রহে টিকার জন্য অপেক্ষা করছে তখন নিজেদের কুৎসিত রূপ দেখাতে শুরু করেছে ধনী দেশগুলো। করোনার টিকাকে সার্বজনীন না করে এরা একচেটিয়াভাবে নিজেদের দখলে রাখতে চাইছে। আর বিতরণ করলেও আগে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে পরে অন্যদের সরবরাহ করার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে তারা।

সোমবার ধনী দেশগুলোর এই পদক্ষেপ বন্ধে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে বার্ষিক স্বাস্থ্য সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছে সদস্য দেশগুলো। দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, কিছু দেশ বৈশ্বিক সংকটের আশঙ্কায় করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর বলে ধারণা করা কিছু ওষুধ বিপুল পরিমাণে কিনে রেখেছে। করোনার টিকা আগে যুক্তরাষ্ট্রকে সরবরাহ করার জন্য ট্রাম্প প্রশাসন একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে রেখেছে। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও প্রচারকর্মীদের বিশ্বাস, মহামারির ইতি টানতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। চলতি মাসের প্রথম দিকে ইউরোপীয় কাউন্সিল ও কমিশন এবং ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও নরওয়ে করোনা মোকাবিলায় যে কোনো উদ্ভাবনী যন্ত্র, চিকিৎসা ব্যবস্থা বা টিকা সমভাবে ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে ভাগাভাগির আহ্বান জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে এই জোট বলেছে, ‘আমরা যদি কোনো টিকার উন্নয়ন করতে পারি যেটি বিশ্বের মাধ্যমে উৎপাদিত হবে, সারা বিশ্বের জন্য, এটা হবে একবিংশ শতাব্দিতে অনন্য বৈশ্বিক সাধারণ পণ্য।’

সোমবার শুরু হতে যাওয়া বার্ষিক স্বাস্থ্য সম্মেলনের আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন করোনার টিকার ব্যাপারে একটি স্বেচ্ছামূলক সম্মিলিত বা সংঘ প্যাটেন্টের প্রস্তাব দিয়ে রেখেছিল। এতে ওষুধ ও টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের উদ্ভাবনের জন্য একচেটিয়া মনোবৃত্তি ত্যাগের জন্য চাপের মুখে রাখার কথা বলা হয়েছিল। অর্থাৎ, সম্মিলিত বা সংঘ প্যাটেন্টের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উদ্ভাবনী পণ্যের উচ্চমূল্য ধার্য্য করতে পারবে এবং সব দেশ সম্মিলিতভাবে ওই পণ্য কিনতে বা উৎপাদন করতে পারবে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই পণ্যটির দাম এককভাবে কম পড়বে যে কোনো দেশের জন্য। তবে যে দেশগুলোতে অধিকাংশ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি রয়েছে তারা সম্প্রতি এ সংক্রান্ত বৈঠকে জানিয়েছে, গবেষণা ও উন্নয়ন খরচ উসুলের জন্য ধনী দেশগুলোর কাছ থেকে পর্যাপ্ত উচ্চমূল্য আদায়ের জন্য তাদের প্যাটেন্ট প্রয়োজন। লাভ অব নলেজ ইকোলোজি ইন্টারন্যাশনালের কর্মী জেমি বলেন, ‘উন্মুক্ত লাইসেন্স প্যাটেন্ট এবং ওষুধ ও টিকার ব্যবহারিক জ্ঞানের নেতৃত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে নিতে চাপ সৃষ্টি করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড ও বেশ কিছু দেশ।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের বৈশ্বিক সংকটের সময় সবার ওপর যখন বড় ধরনের প্রভাব থাকে, তখন আপনাকে প্রত্যাশা করতে হবে এই মহামারির সময় কোনো একচেটিয়া নয় এই কথাটুকু  বলার মতো মেরুদ- যেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের থাকে।’