আসাদুল হক খোকন
রোববার (১০ মে) পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৮৮৭ জনৃ.একদিনে মৃত্যু ও শনাক্তের সর্বোচ্চ সংখ্যা। অর্থৎ আক্রান্ত বাড়ছে, বাড়ছে মৃত্যুও। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়েও মারা যাচ্ছেন কেউ কেউ। এর মধ্যে সময়ের আলো পত্রিকার দুই সাংবাদিকও রয়েছেন।
সরকার পরিস্থতি মোকাবিলায় সাধারণ ছুটি বাড়িয়েছেন। কথা ছিল মানুষ ঘরে থাকবেন। তাতে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসবে। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বলছে- আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে আনার একমাত্র ওষুধ ঘরে থাকা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। কিন্তু মোটা দাগে বললে- এসব নিয়মের তোয়াক্কা করছেন না বেশিরভাগ মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকের ধারণা- আইনকে না মেনে গা জোয়ারিভাবে চলাই স্বাধীনতা। স্বাধীন দেশে যা খুশি তাই করবো, তাতে কার কি?
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট, একটি বড় সংখ্যক মানুষ মাস্ক পরছেন না, সামাজিক দূরত্ব মানছেন না, প্রয়োজন ছাড়াই রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি করছেন। দোকানপাট- বাজার- হাটে নিয়মের কোনো বালাই নেই। আগের মতোই ভীড়, জটলা করে মানুষ কেনাকাটা করছেন। রমজান মান বিধায় কেনাকাটায় আগের জৌলুস ফিরে এসেছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ইচ্ছেমত দরে। মুরগি-মাছেও দর বেড়েছে। কারণ এসব পণ্যের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ।
বাজার-হাটের এই অবস্থা রাজধানীসহ গ্রামের চিত্রও এক। মোট কথা সাধারণের মনে আস্থা ফিরে এসেছে- করোনা একটি অতি সাধারণ সর্দি -কাশির মতো রোগ এবং এতে অন্যরা আক্রান্ত হলে বা মারা গেলেও অন্তত তারা আক্রান্ত হবেন না। মরার তো প্রশ্নই আসে না। যারা মরার তারাই মরবেন। সুতরাং সরকারের নিয়মনীতি মূলত তাদের কাছে- পান্তাভাত!
সাধারণরা সরকারের নির্দেশনা মানছেন না, এমনকি শিক্ষিত অসাধারণরাও মানছেন না। এ বিষয়ে কথা হয়েছে সরকারে দায়িত্বশীল ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও। তাদের মত, সাধারণ মানুষকে বোঝালেও তারা করোনা নিয়ে ভীত বা সতর্ক হচ্ছেন না। বিশেষ করে কারণ ছাড়াই বাইরে বের হচ্ছেন। আড্ডা দিচ্ছেন। বাজারে গিয়ে জটলা পাকাচ্ছেন। পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বোঝাচ্ছেন, সতর্ক করছেন, জরিমানা এমনকি কারাদ-ের মতো শাস্তির মুখোমুখিও করছেন। কিন্তু তারপরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। তারা মনে করেন, এসবের সাথে যদি তাৎক্ষণিক শারিরীক শাস্তি থাকতো তাহলে জনমনে একধরণের ভয় তৈরি হতো। তাতে তারা অন্তত ঘরে থাকতেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হতেন না। কিন্তু এই জাতীয় সংকটের কথা ভেবে এমন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। প্রসাশন জনগণের সাথে নমনীয় আচরণই করছে। তবে তাতে- খুব একটা কাজ হচ্ছে না। এ দেশের জনগণ শক্তের ভক্ত, নরমের যম। তারা আইন অমান্য করাটাকে নিজের বীরত্ব বলে মনে করে!
গ্রামে স্থানীয় প্রসাশন বা ইউপি চেয়ারম্যানদের বক্তব্যও অনেকটা একই। তারা বলছেন, সবাইকে বুঝিয়ে বলার পরও বিধিনিষেধ মানছেন না। হাট-বাজারের ভীর, বাজারের দোকানপাটে সামাজির দূরত্ব না মানার বিষয়ে তাদের ভাষ্য- আমরা চেষ্টা করছি। তবে মানুষ তো আর পশুপাখি না। তারা তো বাজার টাজার করবেই। হাটেও আসা লাগবে। তা না হলে খাবে কি? সরকারি সহায়তার নিত্যপণ্য দেয়া হচ্ছে কিনা? তার জবাবে তারা বলেন, হচ্ছে। কোনো ঘাটতি নেই।
এবার জনসাধারণের বক্তব্যে আসি। তাদের বড় একটি অংশ বলছেন, যতটা পারি বিধিনিষেধ মানছি। এর বেশি পারবো না। তাছাড়া দিনের পর দিন ঘরে বসে থাকলে আমাদের চলবে না। আমরা মরলেও কেউ দেখবে না। সরকারি সহায়তার বিষয়ে তাদের ভাষ্য- বাজারে, স্কুলমাঠে কয়েকজনের নাম লিখে একটা করে ব্যাগ হাতে দিয়ে ছবি তুলে নিয়েছেন চেয়ারম্যান-স্থানীয় সরাকার দলীয় নেতা-মেম্বাররা। তাদের নাম সেই তালিকায় দেয়া হয়নি। তারা কোনো সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পাননি।
অন্য একটি অংশ বলছে, তারা মূলত স্বল্পবিত্ত বা মধ্যবিত্তমানুষ। ছোট চাকরি বা ব্যবসা করেন। কিন্ত করোনা পরিস্থিতির কারণে সব বন্ধ। এর মধ্যে অনেকের চাকরি গেছে। অনেকের অফিস জানিয়েছে, আগামী ৬ মাস অর্ধেক বেতন নিতে হবে। বাকি অর্ধেক এরিয়ার হিসেবে দেয়া হবে না। এই শর্তে চাকরি করলে হ্যাঁ আর না করলে না বলে চলে যান। ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের দোকান বা ব্যবসা বন্ধ। দুই অংশই বলছে, তাদের হাতে জমানো যে টাকা ছিল তা শেষ অথবা শেষের পথে। এ অবস্থায় কি করবেন? কেউ কেউ আত্মীয় স্বজনের থেকে ধার দেনা করে চলছেন। কেউ সংসারে খাবার-দাবার ও নিত্য ব্যবহার্য পণ্য ব্যবহারে কঠোর হয়েছেন। তিন বেলা মাছ-মাংসের বদলে একবেলা মাছ দুই বেলা রুটি-সবজি বা ডাল-ভাত খাচ্ছেন। সম্মানহানির ভয়ে সরকারি ত্রাণ নিতে কারো দুয়ারে যেতে পারছেন না। বাজার বা স্কুলমাঠের লাইনেও দাঁড়াতে পারছেন না। মূলত এই শ্রেণি সংকটে পড়েছে!
এবার আসি রাজধানীতে। সবকিছু ছাপিয়ে সবাই বলছেন, এমন সংকটে আমাদের দুই নগরপিতা বা মেয়র মহোদয়রা কোথায়? আপনারা কেই কি জানেন? কথা ছিল যে কোন সংকটে, বিপদে নগরবাসীর পাশে দাঁড়াবেন তারা। আমাদের দুই মেয়র। কিন্তু পাশে পাচ্ছেন কি?? পেলে ভালো।
বাস-ট্রাক বা ভারী যানবহন বাদে সবই তো এখন চলছে। অদোকানপাট খুলছে। শপিংমলও খুলে দেয়ার অনুমতি মিলেছে শর্ত সাপেক্ষে। ঈদ সামনে। ঈদ আসবে আর নতুন পোশাক পরা হবে না, সেমাই-পোলাও-কোরমা খাওয়া হবে না- এটা হয়? হয় না। রোজা বা সিয়াম বা সংযমের মাস চলছে এখন। কথা ছিল- এ মাসে আমরা মুসলমানরা একমাস সিয়াম সাধরা করে কি করে সংযমী হওয়া যায়, কি করে আত্মত্যাগী হওয়া যায়, কি করে পরোপকারী হওয়া যায়, কি করে লোভ সংবরণ করতে হয়, কি করে অন্যায়- দুর্নীতি ত্যাগ করে ন্যায় আর নীতির চর্চা করতে হয়- এক মাসে তার শিক্ষা নিয়ে পরবতী ১১ মাস এই চর্চা অব্যহত রাখবো- রাখতে চেষ্টা করে যাবো। মূলত; এরই নাম সিয়াম বা সংযম। তো আমরা কি সে চর্চা করছি? কেউ কেউ তো নিশ্চয়ই করছেন। তবে বেশিরভাগ মুসলমান করছেন না। তারা-রোজাকে উপলক্ষ্য করে ইসলামি পোশাক পরে এক কেজিতে ৯০০ গ্রাম দিচ্ছেন, ১০০ লিচুতে ৮৫টা দিচ্ছেন, ভালো ফলের ভেতরে কৌশলে পচা ফল ঢুকিয়ে দিয়ে দাঁত বের করে হাসছেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়াম্যান-মেম্বারদের অনেকে- বিপদে থাকা জনগণের জন্য দেয়া ত্রাণ নিজে নিচ্ছেন, চিকিৎসকদের অনেকে যারা চেম্বারে একটি রোগী দেখে ২ মিনিটে ৮০০ থেকে হাজার টাকা নিতেন তারা চেম্বার থেকে পালিয়ে গোপনে গ্রামের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে বসে মোবাইলে ধর্মীয় ওয়াজ শুনে চোখের পানি ফেলছেন, বন্ধ থাকা স্কুল-কলেজগুলোর বিশিষ্ট শিক্ষাঅনুরাগী-সমাজ সেবক অধ্যক্ষের বরাত দিয়ে এই সংকটেও তাদের টিউশন ফি, স্কুল বাস/গাড়ির ভাড়া নির্ধারিত তারিখের মধ্যে পরিশোধ করতে মোবাইলে ঘণ্টায় ঘণ্টায় এসএমএস দিচ্ছে, বাড়িওয়ালারা ভাড়া না দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছিন- দেবেন বলে হুমকি দিচ্ছেনৃ.
তারপরও আশাহত হবার কারণ নেই। এসবের বাইরেও হাজারো মানবিক গুণের মানুষ আছেন, সেবাপরায়ণ, কর্তব্যপরায়ণ এমন কি সংযমী ও আত্মত্যাগী মানুষেরা আমাদের পাশেই আছেন। যুগে যুগে তারা সব সময়ই থাকেন। থাকবেন। করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে এলে আক্রান্ত হতে পারেন, এমনকি দিনশেষে এই কারণে তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এমন কঠিন পরিস্থিতিকে মেনে নিয়েই হাজারো চিকিৎসক হাসপাতালগুলো করোনা রোগির সেবা দিচ্ছেন। তারা করোনা ভয়ে সেইসব চেম্বারে ২ মিনিটে হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া কাপুরুষ চিকিৎসকদের মতো পালিয়ে প্রাণ বাঁচানোর দলে নেই।
প্রসাশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্ষেত্রের একই কথা। তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। নিজের জীবন দিয়ে রাষ্ট্রের দেয়া দায়িত্ব পালন করছেন তবু পিছু হটছেন না।
আর যাদের কল্যাণে সমগ্র দেশবাসী এই মাহামরীর সমস্ত খবর-আপডেট প্রতি মুহূর্তে ঘরে বসেই- নিজে নিরাপদের থেকেই জানতে-দেখতে পারছেন- সেই মিডিয়াকর্মী বা সাংবাদিকদের কথাও বলতেই হয়। এই ভয়ে তারা পালিয়ে ‘ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন’ স্লোগান পকেটে ভরে নিজের পরিবারের সাথে ঘরে বসে সময় কাটাতে পারতেন। পারতেন- সরকারি ত্রাণ সহায়তায় নিজেদের নাম লিখিয়ে কিছু আয় রোজগারের পথ করতেও। কিন্তু তারাও তা করেননি। নিজের দায়িত্ব পালন করতে যেগে, দেশের কথা দশের কথা লিখতে যেয়ে তারা কখনোই নিজের সংকটের কথা, বিপদে থাকার কথা, অর্থকষ্টের কথা, সন্তানের চিকিৎসা-শিক্ষা ব্যহত হওয়ার কথা লিখতে পারেননি। না নিজের মিডিয়ায় না অন্য মিডিয়ায়। তুলনা করলে- তারা সব সময়ই সিয়াম বা সংযমই সাধনা করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- এই শ্রেণির মানুষদেরও যে দুঃখ-কষ্ট অভাব অনটন থাকতে পারে- অন্যরা তা মনে করেন না। ভাবেন না। যেমনটি ভাবেন না- চিকিৎসকদেরও পারিবারিক জীবন থাকতে পারে- থাকতে পারে অবসর কাটানোর ইচ্ছাৃ..
ফেসবুক লাইভ স্ট্রিমে ও ইউটিউবে যাদের ওয়াজ বা ইসলামি আলোচনা দেখি তাদের নিয়েও কিছু বলা দরকার। যদিও নিজেদের আলেম বলে পরিচয় দেয়া এসব হুজুরদের নিয়ে কথা বলা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ তবু বলি। হাতে গোনা দু’একটি বাদে প্রায় সবার ওয়াজেই সাধারণর সমালোচনা থাকে। ধনী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিল্পী কেউই বাদ যান না। এক এক বক্ত এক এক মাহফিলে এমন এজন বা দুজনকে ধরে তুলোধুনা করেন। যদিও তারাই বলেন- অন্যের অনুপস্থিতিতে তার সমালোচনা করা যাবে না। সে যাক। তো এই সংকটে অন্যের সেবা তো করা যাবে? বেকার-দরিদ্র-দুখী মানুষের পাশে তো দাঁড়ানো যাবে? নিজের হাজারো মুরিদ/ অনুসারীদের উদ্বুদ্ধ করে- যে টাকা আপনাদের পেছনে ব্যয় হয়- হেলিকপ্টার ভাড়া, গাড়ি ভাড়া, থাকা-খাওয়ায় অন্তত সেই টাকা দিয়ে
অভাবগ্রস্ত- বিপদে পড়া মানুষদের একটু সহায়তা তো করা যায়। অন্য ধর্মের লোকদের নাই-ই করলেন, নিজের ধর্মের বিপদে পড়া মানুষের পাশে তো দাঁড়াতে পারতে? পারতেন না? ইসলাম ও গলা বিক্রি করে উপার্জন করা টাকার এক পয়সা কি বিপদগ্রস্তদের দিয়েছেন?? দেননি। সুতরাং- আপনার সংযম নিয়ে সন্দেহ আছেৃজাতির মহাদুর্দিনে, সরকারের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে আপনি
মাহফিলে হুঙ্কার দিয়ে আকাশ কাঁপানো বাঘ এখন বিড়াল হয়ে গুটিয়ে বসে আছেন। এই শিক্ষা কি ইসলাম দিয়েছে? মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) দিয়েছেন??
সরকারের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে নানা অভিযোগ তো আছেই। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে প্রকাশিত তথ্য নিয়েও জনমনে সন্দেহ আছে। তারা ভাবছেন-প্রয়োজন অনুযায়ী টেস্ট করা হচ্ছে না। মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাদের ধারণা এ সংখ্যা আরও বাড়বে। তাছাড়া করোনা লক্ষণ নিয়ে মারা যাচ্ছেন যারা তারা এই হিসাবে আসছেন না। এটি ঠিক নয় বলেও মনে করেন তারা। করোনা মোকাবিলায় সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনায় আছে রাজনৈতিক দল বিএনপিও। তবে সরকারের পাশাপাশি অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও তেমন মাঠে দেখা পাওয়া যায়নি। সুতরাং তারা সংযমী নন। ভোগে বিশ্বাসী। এ দলে সরকার দলীয়রাও কেউ কেউ আছেন। তারাও তাই-ই!
করোনা পরীক্ষার কীট আবিষ্কার ও তার পর্যবেক্ষণ নিয়ে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহর কথায় আসছি না। তাতে বিতর্কই বাড়তে পারে। সরকার না তার, কার কতো দোষ তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাই না। বিদ্যানন্দ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যারা এক টাকায় দরিদ্র পথশিশুদের আহার দেয় তারাও এগিয়ে এসেছে এই সংকটে। সুতরাং এই উদ্যোগের সাথে জড়িতরা সংযমী ও আত্মত্যাগী।
আর কিছু বিত্তশালী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পাশে দাঁড়িয়েছে বিপদগ্রস্তদের। তাদের মধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের নিজেদের কনভেনশন সেন্টারকে করোনা রোগিদের জন্য হাসপাতালে পরিণত করেছেন। মোট ৫ হাজার রোগির চিকিৎসা দেয়া যাবে এমন একটি অস্থায়ী হাসপাতাল বানিয়ে মাত্র দুই সপ্তাহে। এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কেউ কেউ সরকারকে কিছু পিপিই, মাস্ক দিয়ে তার কয়েকগুণ প্রচার করেছেন সামাজিক মাধম্যে। এরা সংযমী নন।
এই রমজানে, সিয়াম সাধনার মাসে এবং এই মহাবিপদের সময়ও এসব ঘটবে- এটি আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয় না। কারণ মানুষ তার বহুদিনের চর্চা বা স্বভাব একদিনে বদলায় না। বিপদে সে মুখে মুখে সংশোধনের ওয়াদা করলেও অন্তরে সংশোধন হয় না। এটি সহজও নয়। দিনের পর দিন সতত, ন্যায়ের চর্চা যাপিত জীবনে না থাকলে হঠাৎ করে সৎ বা ন্যায়পরায়ণ মানুষে পরিণত হওয়া যায় না। তা তিনি যত ক্ষুদ্র মানুষই হোন আর বড় মানুষই হোন। লেখক: সাংবাদিক, দৈনিক ভোরের কাগজ থেকে নেয়া।