কে এম রফিক, যশোর অফিস
অবশেষে যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী-অস্ত্র ব্যবসায়ী আরিফ বিহারী অস্ত্র-গুলি, ম্যাগজিন, মাদকসহ র্যাব-১ এর সদস্যদের হাতে কুমিল্লায় গ্রেফতার হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে তাকে র্যাব সদস্যরা গ্রেফতার করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল (৬ এপ্রিল) বুধবার তাকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়।
আরিফ বিহারী যশোর শহরের বারান্দী মোল্লাপাড়া কদমতলা এলাকার আওয়াল মিস্ত্রির ছেলে।
ব্রহ্মণপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, মঙ্গলবার বিকালে র্যাব-১ (নারায়গঞ্জ রূপগঞ্জ পূর্বাচল ক্যাম্প) সিপিসি-৩ এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান) কাজী আব্দুস সালামের নেতৃত্বে কুমিল্লার বাহ্মণপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী শশীদল ইউনিয়নের মল্লিকাদিঘি একটি দল অভিযান চালায়। এসময় শশীদল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কুমিল্লা-বাগড়া সড়কের উপর থেকে আরিফ বিহারীকে গ্রেফতার করে। পরে তার কাছ থেকে একটি একনালা বন্দুক, তিনটি নাইন এমএম পিস্তল, ২৬ রাউন্ড তাজা বুলেট, ৬টি তাজা কার্তুজ, ৯টি ম্যাগজিন, ৯৩৫ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। এছাড়া একটি লাল রঙের ইয়ামাহা (ফেজার) মোটর সাইকেল জব্দ করে।
এ ঘটনায় র্যাব-১ (নারায়গঞ্জ রূপগঞ্জ পূর্বাচল ক্যাম্প) সিপিসি-৩ এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান) কাজী আব্দুস সালাম বাদী হয়ে থানায় দুটি মামলা করেন। যার একটি অস্ত্র ও অপর একটি মাদক আইনে। এছাড়া আরিফ বিহারীকে থানা পুলিশে সোপার্দ করা হয়।
তিনি বলেন, আরিফ বিহারী একাধিক নামে পরিচিত। সে একক সময় একের নাম ধারণ করে। আরিফ হোসেন প্রকাশ, আরিফ বিহারী প্রকাশ, জুবায়ের হোসেন আরিফসহ তার অনেকগুলো নাম রয়েছে।
ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ আরও জানান, বুধবার আরিফ বিহারীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, আরিফ বিহারীর নামে ২০১৫ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি যশোরের জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ হোসেন হত্যা মামলা হয়। যার মামলা নং ২৩। জিআর নং ১৭২/১৫। ধারা ৩০২/৩৪।
২০১৪ ঝুমঝুমপুরের হাফিজুর হত্যা মামলা হয়। এ মামলা নং ১২৩। ধারা নং ৩০২/৩৪।
২০১৩ সালে সুলতানপুরের আব্বাস হত্যা হয়। যার জিআর নং ১৭৮/১৩। এসব মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামি। এছাড়া অস্ত্র-মাদকসহ অন্তত: ১০টি মামলার আসামি আরিফ বিহারী।
জানা গেছে, গত বছরের ২৮ নভেম্বর র্যাব-৬ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের সদস্যরা আরিফ বিহারীরর বড় ভাই বিহারী শাকিলকে চারটি বিদেশী পিস্তল, চারটি ম্যাগজিন ও ১৩ রাউন্ড গুলিসহ কালীগঞ্জের মিঠাপুকুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। আরিফ ও শাকিল দীর্ঘদিন ধরে যশোরাঞ্চলের অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
তার ছোট ভাই আসিফ হোসেন সানি গত ২০ মার্চ রাতে শহরের জেল রোডে কুইন্স হাসপাতালের সামনে থেকে ছিনতাইয়ের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। তার নামে মারপিট, চুরি, ছিনতাই, হুমকি দেওয়ার অভিযোগে কোতয়ালি থানায় মামলা রয়েছে। মামলা নং ৬।
গত ২৩ মার্চ বড় ভাই বিহারী শাকিলের সাথে ঝিনাইদহ কারাগারে দেখা করে যশোর ফেরার পথে আত্মগোপনে যান আরিফ। আরিফের ছোট ভাই বিহারী আসিফ হোসেন সানি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তার ভাইকে নিমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সাদা পোষাকে ওঠিয়ে নিয়ে গেছে। আরিফ এর আগেও অনেকবার আত্মগোপনে ছিলেন।