বাপা’র ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:
খোদ বন কর্মকর্তা নিজেই সুন্দরবনের কর্তন নিষিদ্ধ সুন্দরী গাছ কাটার ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকার ঘটনা ঘটিয়ে এখন বিপাকে ওই বন কর্মকর্তা নিজেই। পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী ষ্টেশনের ষ্টেশন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন খাঁন বুধবার (৬ মে) দুপুরে বনের ঘাগরামারী এলাকা হতে কর্তন নিষিদ্ধ সুন্দরী ও কাঁকড়া গাছ কেটে তা পাচার করছিল। গাছ পাচারের সাথে জড়িত তিন পাচারকারী সনজিৎ, তরুন ও পংকজ তাৎক্ষনিকভাবে গণমাধ্যমের কাছে স্বীকারও করেন তা। গাছ পাচার কাজে ব্যবহার করা হয় বনবিভাগের পতাকাবাহী ট্রলারও। এ ঘটনায় ইতিমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার/প্রকাশিতও হয়েছে।
এদিকে সুন্দরবন থেকে খোদ বন কর্মকর্তার গাছ কেটে পাচারের ঘটনায় ওই বন কমকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ বেলায়েত হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বনবিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মোঃ মঈন উদ্দি খাঁন। তিনি বলেন, তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরই এসও আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলাসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: বেলায়েত হোসেন আবার এ তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো: এনামুল হককে। চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মো: এনামুল হক বলেন, তিনি ইতিমধ্যেই তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। আগামী রবিবার, সোমবারের মধ্যে তিনি এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
উল্লেখ্য, পূর্ব সুন্দরবনের ঢাংমারী ষ্টেশনের ষ্টেশন কর্মকর্তা (এসও) মোঃ আনোয়ার হোসেন খাঁন ঘাগরামারি এলাকা থেকে সুন্দরী ও কাকড়া গাছ কেটে তা ট্রলারযোগে পাচার করছিল। বুধবার (৬ মে) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পাচার কাজে ব্যবহৃত করা হয় বনবিভাগের পতাকাবাহী ট্রলার। গাছ বহনকারী ট্রলারে থাকা পাচারকারী তরুন, সনজিৎ ও পংকজ বলেন, এ গাছ তাদের এসও আনোয়ার সাহেব ঘাগরামারী থেকে কেটে আনার অনুমতি দিয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনায় বনবিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মোঃ আমির হোসাইন চৌধুরী জানান, এ সংক্রান্ত ভিডিও এবং সংবাদ পেয়েছি, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
খোদ বনবিভাগের কর্মকর্তাই সুন্দরবনের গাছ কাটার ঘটনায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের বাগেরহাট জেলা সমন্বয়কারী মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, বনবিভাগের অসাধু কর্তা ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বনের গাছ কেটে পাচার হচ্ছে, যা প্রত্যক্ষভাবে সবার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এতেই প্রমাণ হয় সুন্দরবন রক্ষায় বনবিভাগ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে, কাজেই এই বনকে রক্ষা করতে হলে বনবিভাগের উপর আস্থা না রেখে সরকারের উচিত বিশেষ নজরদারী করা।