সঙ্কটময় সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় নজর দেয়া জরুরি

1
Spread the love

করোনা মহামারীতে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশও স্থবির হয়ে আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণার মাধ্যমে দেশে করোনা মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া শুরু হয়েছে। অফিশিয়ালি বন্ধ আছে সবপর্যায়ের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম।

২ এপ্রিল থেকে ১২ লাখ শিক্ষার্থীর এবছরের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবার কথা ছিল, আর স্বাভাবিক নিয়মে পরীক্ষা শেষ হবার ৬০ দিনের মধ্যে ফলাফল। আর ২০ লাখ শিক্ষার্থীর ৫ মার্চ এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে, সে হিসাবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ফল প্রকাশ হবে এমন প্রস্তুতি ছিল দেশের সবগুলো বোর্ডের। কিন্তু করোনার কারণে সব কার্যক্রমই পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোটি শিক্ষার্থী এক অস্বস্তিকর সময় কাটাচ্ছে। কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রচলিত-অপ্রচলিত মাধ্যমে অনলাইন কার্যক্রম চালাচ্ছে। এছাড়া বিটিভিসহ কিছু টেলিভিশন চ্যানেলে কাস কার্যক্রম প্রচারিত হচ্ছে সীমিত আকারে। সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত দুই হাজার দুইশত ৬০টি কলেজকে তাদের পাঠকার্যক্রম অনলাইনে চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশের ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের পাঠকার্যক্রম অনলাইনে চালুর অনুমতি পেয়েছে। সবমিলিয়ে কোনোরকমে শিক্ষা কার্যক্রম টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে চারিদিকে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ইন্টারনেট অবকাঠামো, স্মার্টফোন-ল্যাপটপের অভাবসহ নানা কারণে হঠাৎ করে ভার্চুয়াল শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা মানিয়ে নিতে পারছে না।

শিক্ষকের বেতন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন ভাড়া সংক্রান্ত খরচ মেটাতে যেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের উপর নির্ভর করতে হয়, তারা মারাত্মক সঙ্কটের মধ্যে আছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা নয়তো সাহায্যও প্রার্থনা করেছে। অভিভাবক পর্যায়েও মাসিক বেতন বা সেমিস্টার ফি প্রদানের অর্থ সঙ্কট দেখা দিচ্ছে নানা পর্যায়ে।

করোনা পরিস্থিতি কবে ঠিক হবে? কেউ যেহেতু জানে না, সেজন্য অন্যান্য খাতের মতো শিক্ষা খাতও মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে। কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন পড়েছে অনিশ্চয়তায়। শিক্ষাখাতের সার্বিক বিষয়াদি জরুরি ভিত্তিতে নজর দেয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। আমাদের আশাবাদ, দেশের সার্বিক কল্যাণে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমস্যা-সীমাবদ্ধতা দূর করতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা মনোযোগী হবেন।