মণিরামপুরে পিয়নের হাতে ইউপি চেয়ারম্যান লাঞ্ছিত

4
Spread the love


মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :


যশোরের মণিরামপুরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি আদেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে পিয়নের হাতে মশ্মিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন লাঞ্ছিত হয়েছেন। ঘটনাটি ওই ইউনিয়নের পারখাজুরা বাজারের। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফীকে জানানো হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ চেয়ারম্যানের।
অভিযোগ করা হচ্ছে, দোকানপাট বন্ধ রাখার সরকারি আদেশ থাকলেও ওই বাজারের তেল ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান দোকান খোলা রেখে লোক সমাগম করছিলেন। শুক্রবার (১ মে) সকাল নয়টার সময় আনসার-ভিডিপি সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে লুৎফর রহমানকে দোকান বন্ধ করতে বলেন চেয়ারম্যান আবুল হোসেন। ওই সময় দোকান বন্ধ না করে বরং লুৎফর রহমান, তার পিতা জামাল উদ্দিন ও ছোটভাই অপু মিলে চেয়ারম্যানকে লঞ্চিত করে।
চেয়ারম্যান বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফীকে জানালে তিনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুফল চন্দ্র গোলদারকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তিনি সবকিছু শুনে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে বিস্তারিত ইউএনওকে জানিয়ে ফিরে আসেন।
চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের অভিযোগ, লুৎফর মণিরামপুর এসিল্যান্ড অফিসের কর্মচারী হওয়ায় ক্ষমতা দেখিয়ে দোকান বন্ধ না করে আমার সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কোন ব্যবস্থা না নিয়ে ফিরে যাওয়ায় ইউনিয়নের দোকানদাররা এখন আর চেয়ারম্যানের কথা শুনছেন না। আজ (শনিবার) দুপুরের সময়ও লুৎফর দোকান খুলে রেখেছে। তার দেখাদেখি অন্যরাও দোকান খুলে বসে আছেন।
আবুল হোসেন বলেন, ইউনিয়নের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য আমি। আমি নিজের কাজে ওখানে যাইনি। সরকারের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে লুৎফরকে দোকান বন্ধ করতে বলেছি। কথা না শুনে উল্টো সে আমার উপর চড়াও হয়েছে। অন্য দোকানদাররা যখন দেখলো দোকাল খোলা রাখলেও লুৎফরের কোন সাজা হচ্ছে না তাই তারাও দোকান খুলে বসে আছেন,দাবি চেয়ারম্যানের।
চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি ইউএনওকে জানানোর পরও কোন ফল আসেনি। তিনি পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত আমি আর এই ব্যাপারে কোন দায়িত্ব পালন করবো না।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ইউএনওর দোহাই দিয়ে দোকান বন্ধ করতে বলার পর ইউএনওকে নিয়ে কটুক্তি করে লুৎফর। এক পর্যায়ে সে চেয়ারম্যানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়ে লুৎফরের ক্ষমতার উৎস্য কোথায় তা জানার আগ্রহ স্থানীয়দের।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে মশ্মিমনগর ইউনিয়নে কেউ আর লকডাউন মানছেন না। শুক্রবার সন্ধ্যায় মুসল্লিদের মসজিদে ভিড় করতে নিষেধ করায় চাকলা এলাকায় লুৎফর রহমান নামে এক মসজিদের মুয়াজ্জিনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে,বলেন চেয়ারম্যান আবুল হোসেন।


তবে মণিরামপুর এসিল্যান্ড অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার দোকান বন্ধ করা নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আগে লুৎফরের পিতার গায়ে হাত তোলেন। তারপর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়।
এই বিষয়ে জানতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুফল চন্দ্র গোলদারের মোবাইলে কয়েকদফা কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, চেয়ারম্যান ঘটনাটি আমাকে বলেছেন। ঘটনা তদন্তে উপজেলার এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি রিপোর্ট দিলে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারি আদেশ না মেনে কেউ দোকান খোলা রাখলে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নেবে, বলেন ইউএনও।