দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত ৪৯৭, মারা গেছেন ৭ জন

2
Spread the love

ঢাকা অফিস:

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন ৪৯৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৫ হাজার ৯১৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ৭ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৫২ জন। সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান। রবিবারের চেয়ে সোমবার আক্রান্ত ৭৯ জন বেশি। গতকাল আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪১৮ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ৯ জন করোনামুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে ১৩১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন। ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ১৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আমাদের নমুনা সংগ্রহ আগের দিনের তুলনায় ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ হাজার ৮১২টি। আগের দিন পরীক্ষা হয়েছিল ৩ হাজার ৪৭৬টি। গতকালের চেয়ে নমুনা পরীক্ষা প্রায় ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫০ হাজার ৪০১টি। তিনি জানান, নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ৫ জন রাজধানী ঢাকার, ১ জন সিলেট ও ১ জন রাজশাহীর বাসিন্দা। ৫ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। ১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১০ বছরের নিচে একজন শিশু মারা গেছে। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় যারা সুস্থ হয়েছেন, তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েই হয়েছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের যারা বাড়িতে অবস্থান করে সুস্থ হন, তাদের তথ্য আমরা এখানে দেই না। আশা করছি, ভবিষ্যতে তাদের তথ্য সংগ্রহ করে আপনাদের জানাতে পারবো।’ তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮৫ জনকে, এখন পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে ১ হাজার ২২০ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৯ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৭৩৮ জন। সারাদেশে আইসলেশন শয্যা আছে ৯ হাজার ৭৩৮টি এবং ঢাকা শহরে আছে ৩ হাজার ৯৪৪টি। ঢাকা শহরের বাইরে ৫ হাজার ৭৯৪টি রয়েছে। তিনি জানান, আইসিইউ সংখ্যা আছে ৩৪১টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, ২৪ ঘন্টায় প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৪০১ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়া পেয়েছেন ৪ হাজার ৫৯০ জন; এখন পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৭২২ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৭৭ হাজার ৬৭৯ জন। তাদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারন্টাইনে আছেন ছয় হাজার ৩০৭ জন এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৭১ হাজার ৩৭২ জন। তিনি জানান, সারাদেশের ৬৪ জেলা এবং সেখানকার উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬০১টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার ৬৩৫ জনকে কোয়ারেন্টাইন সেবা দেয়া যাবে। অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) সংগ্রহ হয়েছে ৩২ হাজার ৭৪৫টি। বিতরণ হয়েছে ১১ হাজার ৬টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ১৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫৭টি। বিতরণ হয়েছে ১২ লাখ ৯১ হাজার ৯৮টি। ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৫৯টি মজুদ রয়েছে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ৭৮ হাজার ১৭৮ জনকে এবং এ পর্যন্ত ২৪ লাখ ৬৯ হাজার ৩৮৯ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মোবাইল ও ওয়েবসাইটে গত ২৪ ঘন্টায় ২৯ হাজার ৫৬৫ জন এবং এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫ হাজার ৯৩ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৪৮০জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। গত ২৪ ঘন্টায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ৪০ জন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, স্থল, নৌ ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৪১ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৬ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।

ধূমপান ও মদ্যপান কোভিড ১৯ এর ঝুঁকি বাড়ায় উল্লেখ করে তিনি ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করতে সকলের প্রতি আহবান জানান। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, রমজানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।