ঢাকা অফিস
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গত ৪৮ বছরে কাউকে ঘুষ দেয়নি, বাজারে প্রোডাক্ট আসুক বা না আসুক, গণস্বাস্থ্য কাউকে ঘুষ দেয়নি, দেবেও না। দুর্নীতির অংশীদার হয়নি, হবো না। আমরা আন্দোলন করে যাবো। রোববার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র যে কিট উদ্ভাবন করেছে, সেটা সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর নেয়নি। তারা নানা অজুহাত দেখিয়ে গণস্বাস্থ্যের কিট গ্রহণ করেনি। আমরা জনগণের স্বার্থে শুধু সরকারের মাধ্যমে পরীক্ষা করে কিটটি কার্যকর কিনা তা দেখতে চেয়েছিলাম। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের কার্যালয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা কিটের উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীলসহ তিনজন এটি জমা দিতে যান। তবে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর তা গ্রহণ করেনি। এমনকি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তিনজনের একজনকে ওষুধ প্রশাসনের কার্যালয়ে প্রবেশও করতে দেওয়া হয়নি।
‘কর্তৃপক্ষ জমা নেবে না। আমরা গিয়েছিলাম, বললেন যে সিআরও নিয়ে আসেন। তারপর বললেন, এটা আপনারা ভেরিফিকেশন করে আনেন সিআরও থেকে। সিআরও হলো চুক্তিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। ওখানে পয়সা দিতে হবে। কত খরচ লাগবে, তা ওনারা (সিআরও) বাজেট দেবেন। পরে আইসিডিডিআর,বি থেকে ভেরিফিকেশন করিয়ে আনার কথা বলেন। আইসিডিডিআর,বি লকডাউন থাকায় তারা বিএসএমএমইউ, আইইডিসিআর কিংবা আর্মি প্যাথলজি ল্যাবরেটরি থেকে কার্যকারিতা আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখার প্রস্তাব দিলেও তা মানা হয়নি।’ গণস্বাস্থ্যের এ ট্রাস্টি বলেন, বিজ্ঞানীরা জনস্বার্থে এটি আবিষ্কার করেছেন। এটি ব্যবহারে যত দেরি হবে তত জনগণের ক্ষতি বেশি হবে। এ গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের গুরুত্ব আমরা ওষুধ প্রশাসনকে বোঝাতে পারছি না। সিআরও নামের এজেন্টকে পরীক্ষার জন্য ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। আমরা চাই এটির মূল্য ২৫০ থেকে ২০০ টাকায় নামাতে, আর তারা ব্যবসায়িক স্বার্থে নানা অজুহাতে ৫০০ টাকা দাম করতে চায়। ওষুধ প্রশাসন থেকে বলা হয়, দাম বাড়লে বাড়বে। এটা কি জনস্বার্থে কথা হলো? আমার ধারণা একটা শ্রেণি সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তিনি বলেন, কিটটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে চেয়েছি। এখন আমার কাছে কিট থাকলেও সরকারের অনুমোদন ছাড়া আমরা পরীক্ষা করতে পারবো না। গত ১২ এপ্রিল কিটের যথার্থতা প্রমাণের জন্য সরকারের কাছে রক্ত চেয়েছি। কিন্তু পেয়েছি ২২ এপ্রিল, তাও আবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হস্তক্ষেপের পর। এর আগে শনিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে একই জায়গায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট’ হস্তান্তর করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। আমন্ত্রণ জানানোর পরও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) ছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত এ কিট গ্রহণের জন্য যায়নি সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান।