দেশে করোনায় আক্রান্ত ৪১৮৬, মারা গেছেন ১২৭ জন

4
Spread the love

ঢাকা অফিস

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ জন করোনামুক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ১০৮ জন। বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৪ হাজার ১৮৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৪১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। গতকালের চেয়ে বৃহস্পতিবার আক্রান্ত বেড়েছে ২৪ জন। বুধবার আক্রান্ত হয়েছিল ৩৯০ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ৭ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৭। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে নিজ বাসা থেকে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব তথ্য জানান। অধিদপ্তর থেকে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি উপস্থাপন করেন। ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৩ হাজার ৯২১টি। দেশের ২১টি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ হাজার ৪১৬টি। গতকালের চেয়ে নমুনা সংগ্রহের হার ২৮.৪৭ শতাংশ এবং নমুনা পরীক্ষার হার আগের দিনের চেয়ে দশমিক ১০.৩৪ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৯০টি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন করে শিগগিরই ৮ হাজার চিকিৎসক-নার্স নিয়োগ দেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে ২ হাজার চিকিৎসক ও ৬ হাজার নার্স নিয়োগ দেয়া হবে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন খবরের কাগজে ও গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, ভিআইপিদের জন্য আলাদা হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে- এ বিষয়টি সঠিক নয়। সরকার এরকম কোনো ধরনের ব্যবস্থা করেনি। সবার জন্যই একই হাসপাতাল ও একই চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কেউ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের বিবৃতি দেবেন না, যার কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। এটি সরকারি নীতিবহির্ভূত।’ জাহিদ মালেক বলেন, ‘কোনো হাসপাতালই লকডাউন করা হয়নি এবং হবে না। অন্যান্য হাসপাতালে স্বাভাবিক চিকিৎসা বজায় আছে এবং থাকবে। আমাদের সকল হাসপাতালে যেসব ওষুধ সরকার দিয়ে থাকে, সেগুলো সরবরাহ এখনো অব্যাহত রয়েছে এবং সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’

ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, নতুন করে আরও ৩টি জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। ফলে মোট আক্রান্ত জেলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮টিতে। নতুন আক্রান্ত ৩টি জেলা খুলনা বিভাগের। এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের ৮৫ দশমিক ২৬ শতাংশ রাজধানী ঢাকা ও ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। ৪৫ দশমিক ৫১ শতাংশ ঢাকা নগরের বাসিন্দা। ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলা মিলিয়ে এ সংক্রমণের হার ৩৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মোট আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ ৬৮ শতাংশ ও নারী ৩২ শতাংশ।

তিনি বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণ ঘটেছে। যখন কোথাও সংক্রমণ ঘটলে এর উৎস জানা যায় না বা আক্রান্ত ব্যক্তি কিভাবে সংক্রমিত হলেন তা বোঝা যায় না, তখন সে অবস্থাকে সামাজিক সংক্রমণ বলে। বাংলাদেশ এখন সংক্রমণের তৃতীয় ধাপে রয়েছে।’

অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৫ জন, নারী ২ জন। মৃতরা সবাই ঢাকার ভিতরের। এদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ৪১ থেকে ৫০ এর মধ্যে ১ জন।’

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ১২৩ জনকে। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে আছেন ৯৯৫ জন। ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৮ জন। এপর্যন্ত মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬২২ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩ হাজার ৪২৯ জন। এখন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ১ লাখ ৬০ হাজার ৪৬৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৪৮ জন। এনিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৭ হাজার ৮৮৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টিনে রাখা হয় ৩ হাজার ৯৭৭ জনকে। মোট ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫০ জনকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৪১ জন। এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৮৪ হাজার ১৭ জন। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৭৭ হাজার ৯৫৮ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৬ হাজার ৩৭৫ জন। এখন পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টিন ৮৪ হাজার ৩৩৩ জন। বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।