করোনায় খাদ্য সংকটে খুলনার ৩ হাজার বিহারি পরিবার

2
Spread the love

স্টাফ রিপোর্টার

করোনার প্রভাবে খুলনার সাতটি বিহারি ক্যাম্পের ৩ হাজার পরিবার খাদ্য কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। ত্রাণ বিতরণ এক মাস হতে চললেও এসব পরিবারের ৮৫ ভাগই এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের ত্রাণ পাননি বলে জানা গেছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে ১৫ ভাগ পরিবার খাদ্য সহায়তা পেলেও খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই জনগোষ্ঠী এখনও কোনও সহায়তা পাননি।

বুধবার (২২ এপ্রিল) আটকে পড়া পাকিস্তানিদের সংগঠন স্ট্যান্ডার্ড পাকিস্তানি জেনারেল রিপার্টিয়েশন কমিটির (এসপিজিআরসি) খুলনার সাধারণ সম্পাদক কবীর হোসেন বলেন, ‘বিহারি ক্যাম্পগুলোতে খাদ্য সংকট বেড়েছে। দুই দিন আগে এ কমিটির একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেন এবং বিহারিদের খাদ্য সংকটের কথা জানান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিহারিদের কোনও খাদ্য সহায়তাই দিচ্ছেন না। তারা যেভাবে দিচ্ছেন তাতে বিহারিদের মাত্র ১৫ ভাগ পরিবার খাদ্য সহায়তা পেয়েছেন।’

তিনি জানান, খুলনা মহানগরীর খালিশপুরে পাঁচটি ও গিলাতলায় একটি এবং মহানগরীর পাশে রূপসা উপজেলার রহিমনগরে একটি ক্যাম্প রয়েছে। এই সাতটি ক্যাম্পে প্রায় ৩ হাজার বিহারি পরিবার বসবাস করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের খবর কেউ নেয় না। এখন সকল পরিবারেই টানাপড়েন চলছে। আর কত কষ্ট করে চলবো। আমাদের সংগঠনের তেমন ফান্ড নেই। ফলে সংগঠন থেকেও কোনও ধরনের সহায়তা প্রদান করা যাচ্ছে না। এখন এসব পরিবারের জন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।’ গিলাতলা বিহারি ক্যাম্পের শাহিন বলেন, ‘অতীতের যে কোনও সময়ের মতো এখনও আমরা বিহারিরা অবহেলিত। আমাদের খবর কেউ নেয় না। করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এখানকার নিম্ন আয়ের মানুষরা। তারা সংকটে দিন পার করছেন।’

কলোনির আরেক বাসিন্দা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আমরা খানজাহান আলী থানা এলাকার বাসিন্দা। এ মুহূর্তে আমরা চরম মানবিক বিপর্যয়ে আছি। অতিদ্রুত খুলনা জেলা প্রশাসক অসহায় পরিবারের দিকে সুদৃষ্টি রাখবেন বলে আশা করি।’

খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘সিটি করপোরেশন এলাকায় থাকা বিহারি ক্যাম্পের সংকটপূর্ণ পরিবারের তালিকা করে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে এক হাজার বিহারি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে।’

খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘বিহারিদের তালিকা করে পর্যায়ক্রমে খাদ্য সহায়তা প্রদান করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে। কেসিসি এলাকায় যারা আছেন তাদের বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র পদক্ষেপ নেবেন এবং নিয়মিত মনিটরিং করবেন। সরকারিভাবে বরাদ্দ আসা খাদ্য সহায়তা জনপ্রতিনিধিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তারা তালিকা করে পর্যায়ক্রমে এসব সহায়তা প্রদান করবেন। খাদ্য সামগ্রী প্রাপ্তি সাপেক্ষে জনপ্রতিনিধিরা পর্যায়ক্রমে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের প্রদান করবেন।’