স্টাফ রিপোর্টার:
খুলনায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে এ বছর বোরো ধানের চাষ হয়। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় শ্রমিক পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন কৃষকরা। কম শ্রমিক নিয়ে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটছেন তারা। ডুমুরিয়ার কৃষক আহমদ আলী বলেন, ‘বোরো ধান কাটা আগামী সপ্তাহে শুরু করতে পারবেন। কিন্তু ধান কাটা শ্রমিকরা করোনা আতঙ্কে রয়েছেন। মাঠে ধান কাটতে নামলে প্রশাসনের লোকজন তাড়া করতে পারে, এই আশঙ্কায় রয়েছেন।’ তাই শ্রমিক থাকলেও করোনার কারণে সময় মতো শ্রমিক পাওয়া কঠিন হবে বলে তিনি মনে করেন। কৃষক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এখন শেষ সময়ে জমিতে না গেলে, পরিচর্যা না করলে, ব্লাস্ট রোগের হানায় সব ধান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ করণে মাঠে যাচ্ছি।’ ধান ক্ষেতে কৃষকরাখুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বেতাগ্রাম জোনের কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘গত বছর ধান কাটার সময় শ্রমিকের জন্য একবেলা ৩৫০ টাকা আর দুই বেলার জন্য ৫০০ টাকা দিতে হতো জনপ্রতি। এবার পারিশ্রমিক বেশি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া দুস্কর হতে পারে। করোনার মধ্যে কৃষকরা মাঠে নামলেও শ্রমিকরা উদ্বেগের মধ্যে আছেন। আরও দুই সপ্তাহ পর এ অবস্থা সম্পর্কে ভালো বোঝা যাবে। এখন বেশিরভাগ জমির ধানই ফুলে উঠেছে। আগাম রোপণ করা ধান কৃষকরা নিজ উদ্যোগেই অল্প অল্প করে কাটতে শুরু করেছেন। তবে ধান কাটা পুরোদমে শুরু হলে শ্রমিক সংকট দেখা দিতেও পারে।’
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের কর্মকর্তা মোসাদ্দেক হোসেন জানান, তার উপজেলায় ২১ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান, ৬০ হেক্টর জমিতে তরমুজ, ৫০ হেক্টরে পেঁয়াজ, ২০ হেক্টরে খাট জাতের বরবটি, ৬ বিঘায় থাই পেঁয়ারা, ৩৫ বিঘায় লতিরাজ কচু, ২০ বিঘায় সূর্যমুখী, ৬০ হেক্টরে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এ বছরই প্রথম এক বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলক মেথি চাষ করা হয়েছে। এর ফলনও ভালো হয়েছে। খাট বরবটিও ৪ বছর আগে পরীক্ষামূলক চাষ হয়েছিল। এখন এ বরবটি চাষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গাছ থেকে ধান ছুড়ানোর কাজ চলছেখুলনার দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘তার উপজেলায় এখন তরমুজ চাষ বেশি আছে। কৃষকরা নিয়ম মেনেই মাঠে যাচ্ছেন।’ খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ পঙ্কজ কান্তি মজুমদার বলেন, ‘খুলনার কৃষকরা সচেতন আছে। তারা নিয়ম মেনেই মাঠে কাজ করছেন। কৃষকরা মাস্ক ব্যবহার করছেন। মাঠে তারা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছেন। সার ও কীটনাশকের দোকান খোলা রাখা হচ্ছে। তবে এখন ফসল তোলার সময়। তাই সার ও কীটনাশক দরকার হচ্ছে না।’ তিনি বলেন, ‘ধানতো মাঠে ফেলে রাখা যাবে না। করোনার প্রভাবের মধ্যেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাটার কাজ করলে প্রশাসন বাধা দেবে না। নিয়ম না মানলে প্রশাসন সেখানে হাজির হতেই পারে।’