করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়িয়েই চলছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের চিত্রও এক। এখানেও আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে হাজার ছাড়িয়ে গেছে, মৃতের সংখ্য ৫০। বাংলাদেশে এক্ষেত্রে নতুন শঙ্কা শুরু হয়েছে। সিলেটে করোনা আক্রান্ত এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (মেডিসিন) ডা. মঈন উদ্দিন মারা গেছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে চিকিৎসক হিসেবে তিনি প্রথম মারা গেলেন। জানা যায়, ‘‘গত ৫ এপ্রিল ডা. মঈন উদ্দিনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। করোনা আক্রান্ত হলেও তিনি নগরীর হাউজিং এস্টেটের নিজ বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন। ৭ এপ্রিল তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রথমে তাকে সিলেটে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৮ এপ্রিল সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কুর্মিটোলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ডা. মঈনের অবস্থার একটু উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু বুধবার সকালে তিনি মারা যান।’’
করোনাভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার প্রথম দিকেই আমরা শুনে আসছি চিকিৎসকদের নিরাপত্তাহীনতার কথা। সরকারের পক্ষ থেকেও চেষ্টা করা হচ্ছিল যাতে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ বিষয়ে আন্তরিকতার কথা প্রকাশ করেছেন। চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় প্রশংসনীয় পদক্ষেপও তিনি নিয়েছেন। তবে মাঠ পর্যায়ে কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা আমরা লক্ষ্য করেছি। এমনকি কয়েকজন চিকিৎসক করোনা চিকিৎসার মধ্যে খাবার না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন। এ বিষয়গুলো দুঃখজনক। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা এবং সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে আমাদের নিজেদের স্বার্থেই। কারণ, তারা নিরাপদ থাকলে এবং সর্বোচ্চ সুবিধা পেলে তারা এই যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে দিন শেষে ক্ষতি আমাদেরই। এক্ষেত্রে জনসাধারণকেও সচেতন হতে হবে। বেশ কিছু জায়গায় করোনা উপসর্গে আক্রান্তরা তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নেওয়ায় ডাক্তাররা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন আত্মঘাতী কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে করোনাযুদ্ধে আমাদের সারিয়ে তোলার জন্য ডাক্তারদের পাওয়া যাবে না। তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে যাতে সক্ষম থাকেন সেই ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।