মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
যশোরের মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্বাস্থ্যকর্মী (৩৩) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রোববার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরীক্ষাগার এই তথ্য দিয়েছেন। তার বাড়ি মণিরামপুর উপজেলার হাজরাকাঠি গ্রামে। তিনি ঝাঁপা ইউনিয়নে কর্মরত এবং মণিরামপুর হাসপাতালের পিছনে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। গত চারদিন ধরে ওই স্বাস্থ্যকর্মী কেশবপুরের আমিননগর গ্রামে শ^শুর বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এদিকে বিষয়টি জানাজানির পর শ^শুর বাড়িতে রেখেই সেই স্বাস্থ্যকর্মীর চিকিৎসা শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। রোববার সন্ধ্যায় যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম ওই স্বাস্থ্যকর্মীর কেশবপুর এলাকার শ^শুর বাড়িতে যান। চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্র দিয়ে তাকে সেই বাড়িতে আইসোলেশনে রেখে গেছেন।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি ছাড়াও কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান, ওই থানার ওসি জসীম উদ্দিন, মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলামসহ সেনা সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, ওই স্বাস্থ্য কর্মীর বয়স কম হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই স্বাস্থ্যকর্মী গত বুধবার পর্যন্ত মণিরামপুর পৌরশহরের কামালপুরের ভাড়া বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার শ^শুর বাড়ি যান। তিনি শ^শুর বাড়িতে নিজ থেকেই আলাদাভাবে থাকছেন।
ইউএনও বলেন, তিনি যেই বাড়িতে থাকছেন সেই বাড়ি, তার পৌরশহরের বাসা বাড়ি ও মশ্মিমনগরের গ্রামের বাড়িতে বাড়তি নজরদারি রাখা হয়েছে।
তবে মশ্মিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, বিকেলে ইউএনও স্যারের সাথে কথা হয়েছে। ওই স্বাস্থ্যকর্মীর নিজের বাড়িসহ আশপাশের ৪-৫টা বাড়ি এবং হাজরাকাঠি বাজার লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ওই স্বাস্থ্য কর্মীর শ^শুর বাড়ি মণিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার সিমান্তবর্তী আমিননগর গ্রামে হওয়ায় মুজগুন্নী ও আমিননগর এই দুই গ্রামের প্রায় একশ বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টিকে লকডাউন বলছেন না।
যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, আমরা ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বর্তমানে অবস্থান করা বাড়িতে গিয়েছি। তাকে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়েছে। সেখানে বাড়িতে রেখেই তার চিকিৎসা চলবে।
আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী এরআগে কোন করোনা রোগীর সংস্পর্শে গেছেন কিনা এমন প্রশ্নে সিভিল সার্জন বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত তেমন কোন তথ্য পাইনি। এছাড়া অপর এক প্রশ্নে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখনি লকডাউনে নেওয়ার কোন সিদ্ধান্ত নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা।
প্রসঙ্গত, মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্বাস্থ্য সহকারী (ফিল্ডে কর্মরত) সদ্য জ¦রে আক্রান্ত হলে গত ৮ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরীক্ষাগারে পাঠান সিভিল সার্জন অফিস। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আজ (রোববার) ওই স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত বলে জানানো হয়। এরপর এই খবরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মণিরামপুরে।