মণিরামপুরে অভিযান অব্যাহত থাকলেও নিষেধাজ্ঞা মানছেন না অনেকেই

4
Spread the love

আনোয়ার হোসেন, মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি :

ঘাতক করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের বেধে দেওয়া নির্দেশনা মানছেন না যশোরের মণিরামপুরের বেশিরভাগ মানুষ। জনসমাগম ঠেকাতে সকাল নয়টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার সদস্যদের সাথে নিয়ে ক্রমাগত অভিযান পরিচালনা করছেন ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুফল চন্দ্র গোলদার। অভিযান অভ্যহত থাকলেও সকাল নয়টার পরপরই মণিরামপুর রাজারে লোকসমাগম ঘটতে শুরু করে। অন্যদিনের মত ভিড় লেগে থাকে রাজগঞ্জ মোড়সহ বাজারের প্রধান সড়কে। আর গ্রামাঞ্চলের অবস্থাতো আরও নাজুম।

সকাল ৮টা থেকে দুপুর দুইটা ও সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মুদি ও তরকারির দোকান ছাড়া বাকি দোকানপাট বন্ধ থাকার নির্দেশনা থাকলেও তা মানছেন না এখানকার ব্যবসায়ীরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে মণিরামপুর বাজারে ফলের দোকান থেকে শুরু করে চায়ের দোকান, খাবার হোটেল, কাপড়, কসকেটিক্স, হার্ডওয়ার, ইলেক্ট্রনিক্স এমনটি সোনার দোকানগুলো খোলা থাকতে দেখা যাচ্ছে। প্রশাসন বাজারে অভিযানে নামার সাথে সাথে দ্রুত দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে; ফাঁকা হয়ে পড়ছে প্রধান সড়ক। তারা সরে পড়ার সাথে সাথে বাজারের চিরাচরিত রুপ আবার ফুটে ওঠছে। নিত্য এভাবে প্রশাসনের সাথে চলছে লুকোচুরি খেলা।

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুফল চন্দ্র গোলদার বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় কাপুড়িয়া পট্টিতে দোকান খোলা রেখে পালিয়ে যান নিউ শাড়ি প্যালেসের মালিক মাস্টার মোশারেফ হোসেন। পরে তাকে খুঁজে এনে প্রশাসন পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরআগে সোমবার সকালে অভিযানকালে পাইকারী কাঁচা বাজারের পিছনের খাবার হোটেলটি খোলা পান আদালত। আদালত দেখে মালিক মিন্টু হোটেল ফেলে পালিয়ে যান। ফলে তাকে জরিমানার আওতায় আনতে পারেননি ম্যাজিস্ট্রেট সুফল গোলদার। আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল মান্নান এসব তথ্য জানান।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মণিরামপুরের পশ্চিম এলাকার সোহরাব মোড়, টেংরামারী বাজার, শেখপাড়া, কোদলাপাড়া, ভান্ডারী মোড়, রোহিতা, বাসুদেবপুর বাজার, সরণপুর জামতলা, কাশিমপুর মোড়, মুড়াগাছা বাজার, ইত্যা বাজারসহ গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন মোড়ে প্রতিদিন ভোরে ও সন্ধ্যায় ব্যাপক লোকসমাগম ঘটছে। সকাল-সন্ধ্যে খোলা থাকছে চা দোকানগুলো। সেনাবাহিনী, পুলিশ বা প্রশাসন ঢোকার খবর পেলেই লোকজন দ্রুত সটকে পড়ছেন। আর প্রশাসন সরে পড়লে আবার লোকজন জমায়েত হন।

সরণপুর এলাকার ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, এখানকার মানুষজন সকাল বিকেল মোড়ে জমায়েত হচ্ছেন। ভাবটা এমন মনে হয় তারা দেশের পরিস্থিতি কিছুই জানেন না।

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়াতে সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত মুদি দোকান এবং সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কাঁচা বাজার খোলা থাকবে। এছাড়া ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে নজর রাখার জন্য প্রশাসন ছাড়াও প্রতি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা নিত্য অভিযান অভ্যাহত রেখেছি। নির্দেশ অমান্য করে দোকানপাট খোলা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় বা বাজারে লোকজন পেলে তাদের বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। জনসমাগম ঠেকাতে আমরা যথাসাধ্য কাজ করে যাচ্ছি।