করোনাভাইরাস বিশ্বে কতোটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে তা নতুন করে বলার নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমরাও ভুক্তভোগী। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ঘরবন্দী। দু’হাজার বিশ সালে জ্ঞান-বিজ্ঞান আর আধুনিক সমরাস্ত্রের যুগে এসেও পরাশক্তিগুলোর অসহায় আত্মসমর্পণ। তাও আবার ক্ষুদ্র এক ভাইরাসের কাছে। কখন কে আক্রান্ত হয়ে যায় এ আতঙ্ক সবার মধ্যে। এমন আতঙ্ক থেকে বাঁচতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জনগণকে বাসায় থাকতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এজন্য সাধারণ ছুটি পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে মানুষজনকে বাইরে যেতে না হয়। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এতকিছুর পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে অসচেতনতা এবং নিয়ম না মানার প্রবণতা বেশি। এজন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীকে কঠোর হওয়ার ঘোষণা দিতে হয়েছে।
এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ ইবনে জায়েদ বলেছেন: সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হোম কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে গত কয়েক দিন লোকজনের মধ্যে একটু শৈথল্য দেখা গেছে। তাই সরকারি নির্দেশনার প্রতি কেউ শৈথল্য প্রদর্শন করলে বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) থেকে নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে মানতে বাধ্য করা হবে। তবে সরকারিভাবে যেসব জরুরি পরিষেবার কথা বলা হয়েছে তা এই কঠোরতার আওতামুক্ত থাকবে। সেনাবাহিনীকে জনগণের স্বার্থেই এমন কঠোর মনোভাব গ্রহণ করতে হয়েছে। আইএসপিআর পরিচালকের কথায় এটা স্পষ্ট যে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হোম কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে গত কয়েক দিন লোকজনের মধ্যে একটু শৈথল্য দেখা না গেলে এমন সিদ্ধান্তের প্রয়োজন ছিল না। এরপরও কঠোরতার বদলে নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সেনাবাহিনীকে আমরা সচেতনতার জন্য মাইকিং করতে দেখেছি। এটা অবশ্যই ভালো কাজ। জনগণকে সচেতন করে তুলতে পারলে কঠোরতার প্রয়োজন হবে না। এজন্য সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেয়েও জনগণের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা বেশি প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের নিরাপত্তার জন্যই নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রীও জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সবাইকে যার যার ঘরে অবস্থান করতে বলেছেন। সেখানে সহযোগিতার বদলে শৈথল্য কাম্য নয়। এ মুহূর্তে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করে আবারও আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরবোই।