আবু হোসাইন সমুন, মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:
করোনায় বেকার হয়ে পড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ঘরে আটকে রাখা অনেকটা দুস্কর হয়ে পড়েছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারী ছুটি ও সকলকে ঘরে থাকার সরকারের নিদের্শনা মেনে প্রথম দুই চারদিন দরিদ্র লোকজন ঘরে থাকলেও পেটের দায়ে তাদেরক রাস্তার বের হতে হচ্ছে। শুরুর কয়েকদিন রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকলেও এখন আর সে চিত্র নেই। কাজ ও জীবিকার তাগিদে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা আগের মত না হলেও বেশ সংখ্যক চোখে পড়ছে। তবে রাস্তাঘাটে দেখা যাচ্ছেনা সরকারী ও বেসরকারী চাকুরীজীবিদের। কারণ মাস গেলে তো বেতন তাদের ঘরে আসে। ঘর থেকে না বের হলেও তেমন কোন ক্ষতি নেই। এই মুহূর্তে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর শ্রমিকেরা।
এমন দরিদ্র মানুষের সঠিক কোন পরিসংখ্যান উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে না থাকলেও করোনা উপলক্ষ্যে সরকারের দেয়া বরাদ্দ পর্যায়ক্রমে তা বন্টন করছেন তারা। উপজেলা প্রশাসন বলছেন বরাদ্দ পর্যায়ক্রমে আসছে এবং তা দরিদ্রদের মাঝে বন্টন হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রাহাত মান্নান জানান, প্রথম দফায় আসা ১০ মে:টন চাল ১ হাজার পরিবারের মাঝে বাড়ী বাড়ী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া দ্বিতীয় দফায় বরাদ্দ পাওয়া ১০ মে:টনও দুই তিন দিনের মধ্যে বিতরণ করা হবে। তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ থেকে দুই দফায় দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন এবং উপজেলা প্রশাসনের ফান্ড হতে ৬০ হাজার টাকা চাল, ডাল, তেল ও সাবান দেয়া হয়েছে। বিতরণ করা হয়েছে ১ হাজার মাস্কও। এছাড়া ১১৫টি জীবণানাশক স্প্রে যন্ত্র কেনা হচ্ছে। যা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্তকরণের কাজ করা হবে।
পৌর কর্র্র্তৃপক্ষও করোনাভাইসের সংক্রমণ রোধে নানা ধরণের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন। পৌর মেয়র নিজেও পাশে দাঁড়িয়েছেন ঘরে বন্দী দরিদ্র মানুষের পাশে। পৌরসভা থেকে সাধারণ মানুষের মাঝে এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। গরীব ও পথচারীদের দেয়া হয়েছে প্রায় দেড় হাজার হাত ধোঁয়ার সাবান। এছাড়া প্রতিনিয়ত পৌরসভার ডিজিটাল মাইক থেকে করোনাভাইরাসের সতর্কতা নিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সকলে থাকতে বলা হচ্ছে নিজ ঘরে। পৌর মেয়র তার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে প্রায় একশ দরিদ্র মানুষের ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন খাবার। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দিচ্ছেন খাবার পানিও। পৌরসভার নিজস্ব গাড়ী ও কর্মচারীদের দিয়ে শহরের অলিগলি জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছেন।
পৌর মেয়র আলহাজ্ব মো: জুলফিকার আলী জানান, প্রথম দফায় সরকারী বরাদ্দ পেয়েছেন দুই টন চাল ও ২০ হাজার টাকা। এবং দ্বিতীয় দফায় পেয়েছেন দুই টন চাল ও ১০ হাজার টাকা। তবে এ বরাদ্দ পৌরসভার দরিদ্র জনগোষ্ঠী অনুযায়ী অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন তিনি। এই বরাদ্দ আরো বাড়ানো প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। তাই পৌর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ১২শ পরিবারের জন্য ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ২ কেজি আলু ও ১টি করে সাবান দেয়ার প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড থেকে তিনি এসব বিতরণ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।