মণিরামপুর ও যশোর প্রতিনিধি:
যশোরের মনিরামপুরে তিন বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে ছবি তোলার ঘটনায় সমালোচিত সেই এসিল্যান্ড (সদ্য প্রত্যাহার) সাইয়েমা হাসানকে ফেসবুকে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার অভিযোগে ঢাকা থেকে আটক ব্যাংক কর্মকর্তা জাফর আহমেদকে মনিরামপুর থানায় আনা হয়েছে। রবিবার গভীর রাতে তাকে থানায় আনার পর থেকে সেখানে নিজ কৃতকর্মের অনুশোচনায় বারবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালান তিনি।
মনিরামপুর থানার ওসি (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম জানান, ডাচ বাংলা ব্যাংকের আঞ্চলিক কর্মকর্তা জাফর আহমেদের বিরুদ্ধে এসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসান বাদি হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন। সোমবার সেই মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে জাফর আহমেদকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এছাড়াও এসিল্যান্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাকড করার অভিযোগে উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার প্রর্ল্লাদ দেবনাথ বাদি হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপর একটি মামলা করেছেন। সোমবার দুপুরে থানা থেকে আদালতে নেয়ার সময় জাফর আহমেদ জানান, কয়েকদিন ধরে তিনি মানষিক বিষাদগ্রস্থ ছিলেন। নিজ কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করে তিনি বারবার বলছিলেন এ জঘন্য কাজের জন্য তার শাস্তি হওয়া উচিত। জাফর জানান, রাতে হাজতে কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে পুলিশি পাহারার কারণে ব্যর্থ হন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জহির রায়হান জানান, সোমবার ৫ দিনের রিমন্ডের আবেদন জানিয়ে জাফর আহমেদকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে হাজতে রাখা অবস্থায় বারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অপরদিকে এসিল্যান্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হ্যাক করার অভিযোগে উপজেলা সহকারি প্রোগ্রামার প্রল্লার্দ দেব নাথ বাদি হয়ে কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে রবিবার রাতে অপর একটি মামলা করেন। তবে এ মামলায় পুলিশ এখনো কাউকে আটক করেনি। উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে যশোরের মণিরামপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানের নেতৃত্বে গত শুক্রবার ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে চিনাটোলা বাজারে অভিযানের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন প্রথমে দুই বৃদ্ধ। এর মধ্যে একজন বাইসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। অপরজন রাস্তার পাশে বসে কাঁচা তরকারি বিক্রি করছিলেন। তবে তাদের মুখে মাস্ক ছিল না। এ সময় পুলিশ ওই দুই বৃদ্ধকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে সাইয়েমা হাসান শাস্তি হিসেবে তাদের কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন। শুধু তাই নয়, এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই তার মোবাইল ফোনে এ চিত্র ধারণ করেন। এছাড়া পরবর্তীতে অপর এক ভ্যান চলককে অনুরূপভাবে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন।