সাংবাদিক বালু হত্যা মামলার বিস্ফোরক অংশের রায় সোমবার

2

স্টাফ রিপোর্টার 

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক হুমায়ুন কবির বালু হত্যা মামলার বিস্ফোরক অংশের রায় ঘোষণা করা হবে আজ। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জননিরাপত্তা বিঘ্রকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে এ রায় ঘোষণা হবে। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো রায় ঘোষণা করবেন।  

বিস্ফোরক অংশের আসামিরা হলেন নগরীর জাহিদুর রহমান রোডের হোসেন ভিলার বাসিন্দা স্বাধীন ওরফে সৈয়দ ইকবাল হোসেন স্বাধীন। সে বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট থানার ঘোষগাতি গ্রামের মৃত. সৈয়দ শাহরিয়ার ছেলে। দক্ষিণ টুটপাড়া ইস্ট সার্কুলার রোডের মো. মোশারফ হোসেনের ছেলে নজু ওরফে রিপন ওরফে খোড়া নজু, রূপসা থানাধিন রহিম নগরের আবু তাহেরের ছেলে মাসুম ওরফে জাহাঙ্গীর, বসুপাড়ার আব্দুস সাত্তারের ছেলে রিমন ওরফে আসাদুজ্জামান ও ২৩, মুন্সিপাড়া ২য় লেনের মৃত. এ্যাড. আজিজুর রহমানের ছেলে জাহিদ ওরফে সবুজ ওরফে জাহিদুর রহমান। ৫আসামির মধ্যে ৪জন জামিনে রয়েছে এবং মাসুম পলাতক ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২৭ জুন দুপুরে তিন ছেলে-মেয়েকে সাথে নিয়ে খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক জন্মভূমির সম্পাদক হুমায়ূন কবীর বালু তার মায়ের সাথে দেখা করে বাসার সামনে গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে যেতেই পেছন থেকে বোমা মেরে তাকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তার ছেলে আসিফ কবির আহত হয়। মামলাটি ২০০৫ সালের ২৫ অক্টোবর দ্রুত বিচার আদালতে প্রেরিত হয়। ২০০৬ সালের ৪ জানুয়ারি রাষ্ট্র পরে আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেেিত বিচারক মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। সর্বশেষ ২০০৭ সালের ১২ অক্টোবর গোয়েন্দা পরিদর্শক চিত্তরঞ্জন পাল সাত জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। বিভিন্ন কার্যদিবসে আদালত ৩৬ জনের মধ্যে ২৪ জনের স্যা গ্রহণ করেন। স্যা প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক খুলনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আ. সালাম সিকদার স্যা-প্রমাণের অভাবে ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলার ৭আসামিকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। কোন প্রকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সেই আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপ আদালতে হাজির করতে পারেনি। বরং মামলায় যাদেরকে সাী রাখা হয়েছিলো তাদের মধ্যে অনেকে আদালতে হাজির হয়নি। বার বার আদালত থেকে সমন দিয়েও তাদের হাজির করা সম্ভব হয়নি বলেও আদালত সূত্রে জানা গেছে। এরপর থেকে বিস্ফোরক অংশের সুষ্ঠু বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে সাংবাদিকরা। ২০০৯ সালের ১০ মে খুলনার তৎকালীন মুখ্য মহানগর হাকিম মো. বারেকুজ্জামান সিআইডিকে বিস্ফোরক মামলার অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। গত ৬ বছরে মোট ৮ বার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। সর্বশেষ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র সহকারী পুলিশ সুপার শাহাদাৎ হোসেন আদালতে সম্পূরক চার্জশীট জমা দেন। সম্পূরক এ চার্জশীটে স্বাধীন ওরফে ইকবাল হোসেন স্বাধীন, নজু ওরফে খোড়া নজু, মাসুম ওরফে জাহাঙ্গীর, রিমন ওরফে আসাদুজ্জামান, জাহিদ ওরফে সবুজ ওরফে জাহিদুর রহমানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া শোয়েব, সুমন, আবদুর রশিদ তপন, বিডিআর আলতাফ, শ্যামল ওরফে দিদার ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ায় মামলা থেকে অব্যাহতি এবং জামিনে থাকা সাইফুর রহমান, বাবুল, সেলিম ও নাসির খানের বিরুদ্ধে পূর্বের অভিযোগের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। মামলায় ৫৮ জনকে সাী রাখা হয়েছে। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন। হত্যা মামলার বিচারে সকল আসামি উপযুক্ত সাীর অভাবে খালাস পেলেও বিষ্ফোরক অংশে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় নিহতের পরিবার ও সহকর্মীরা আজও পথ চেয়ে বসে রয়েছে।