বাংলাদেশেও করোনা আতঙ্ক নয় সতর্ক থাকুন

0

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটল বাংলাদেশেও। গত রবিবার সরকারের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানায়, দেশে করোনা ভাইরাসে ৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে করোনা আক্রান্ত শতাধিক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের নামও যুক্ত হলো। এমন বার্তা আমাদের জন্যও উদ্বেগের-উৎকণ্ঠার। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে। সচেতনতাই এই ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সরকারও ইতোমধ্যে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হতে হবে। চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। এরপর পর্যায়ক্রমে তা চীনের অন্য রাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। গত আড়াই মাসে শুধু চীনেই আক্রান্ত হয়েছে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩ হাজার জনের। ধাপে ধাপে বিস্তার ঘটিয়ে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি একশর বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে এই ভাইরাস নিয়ে বিশ্বজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি (হেলথ ইমার্জেন্সি) ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গতকাল পর্যন্ত সারাবিশ্বে ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৮২৮ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে প্রায় ৬১ হাজার মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনার ‘মহামারি হয়ে ওঠার আশঙ্কা’ রয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব ক্রমেই বৈশ্বিক মহামারির রূপ নিচ্ছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৩ জন শনাক্ত হয়েছে। এতে সারাদেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা ঠিক হবে না বলছেন চিকিৎসকরা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এগুলো হলো ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার, গণপরিবহন এড়িয়ে চলা, প্রচুর ফলের রস এবং পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, ঘরে ফিরে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। কিছু খাওয়া কিংবা রান্নার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে, ডিম কিংবা মাংস রান্না করার আগে ভালোভাবে সিদ্ধ করা, ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে ফেলা, নিয়মিত ঘর এবং কাজের জায়গা পরিষ্কার রাখা এবং অপ্রয়োজনে ঘরের দরজা-জানালা খুলে না রাখতে বলা হয়েছে। পরামর্শগুলো যথাযথভাবে আমাদের পালনীয়। করোনা ভাইরাস যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে না পারে সে ব্যাপারে আগাম জরুরি ব্যবস্থা নেয়াও কর্তৃপক্ষের সচেতন দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমরা এখন এমন এক সংবেদনশীল পর্যায়ে পৌঁছেছি, সংক্রমণ পরিস্থিতি যে কোনো দিকে যেতে পারে। ভাইরাসটি মহামারি হয়ে উঠতে পারে। আমাদের প্রস্তুতি কতটুকু সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কিছু বলা হয়নি। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই সরকারকে এ ব্যাপারে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।